চট্টগ্রাম: রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতাদের হুমকির মুখে এক কর্মচারীর বদলি আদেশ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসময় শ্রমিক লীগ নেতারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মকবুল আহামদ’র কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। জিএম কার্যালয় থেকে বের হয়ে উপ-পরিচালক (জনংযোগ) জোবেদা আক্তারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রাফিক বিভাগের ‘বিতর্কিত’ এমএলএসএস (পিয়ন) মনোরঞ্জন কূর্মীকে উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) শাখায় বদলি করা হয়। এতে সিআরবিতে তোলপাড় শুরু হয়। কারণ এর আগে অনিয়মের অভিযোগে এ শাখা থেকেই তাকে ট্রাফিক বিভাগে বদলি করা হয়েছিলো।
অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও ফের তাকে জনসংযোগ শাখায় বদলির পর সমালোচনার মুখে গত ১৫ ডিসেম্বর তার বদলি আদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
তার এ বদলীর আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন রেল শ্রমিক লীগের কিছু নেতাকর্মী। এরপর ওই বদলি আদেশ প্রত্যাহার করে নিতে মঙ্গলবার সকালে শ্রমিক লীগ নেতারা কর্মকর্তাদের চাপ সৃষ্টি করেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে রেল শ্রমিক লীগের প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও রেল সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মী রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মকবুল আহমদ ও উপ পরিচালক (জনসংযোগ) জোবেদা আকতারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা উশৃঙ্খল আচরণ ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে মনোরঞ্জনকে তাৎক্ষণিকভাবে জনসংযোগ শাখায় বদলি করতে চাপ সৃষ্টি করলে এক পর্যায়ে নতি শিকার করতে বাধ্য হন সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারা।
দিনভর হুমকি ধমকির পর বিকেল চারটায় মনোরঞ্জনকে প্রত্যাহার করা বদলীর আদেশ বাতিল করে ফের তাকে জনংযোগ শাখায় বহাল করে আদেশ জারি করা হয়। এক্ষেত্রে একই পদে কর্মরত সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে চীফ পার্সেনোল অফিসে বদলি করা হয়।
রেলের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) জোবেদা আকতার বিষয়টি স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো তাতে বদলি আদেশ প্রত্যাহার করা ছাড়া আমাদের সামনে অন্যকোনো উপায় ছিলো না। ’
শ্রমিক লীগের এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, তারা শ্রমিক লীগ নেতা হলেও এ রেলওয়ের কর্মচারী। তারা যে আচরণ করেছে তা খুবই দু:খজনক।
শ্রমিক নেতাদের পাশাপাশি যার বদলি আদেশ নিয়ে এতো কাণ্ড সেই মনোরঞ্জন তার বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় ওই কর্মকর্তারা বলেন, যে কর্মকর্তার অধীনে চাকরি করবে সেই যদি হুমকি ধমকি দেয় তাহলে তার কাছ থেকে কাজ আদায় করবে কিভাবে।
তবে বদলি আদেশ বাতিলের জন্য চাপ সৃষ্টির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সকালে গিয়ে আগের আদেশ বহাল রাখার জন্য বলেছি। এছাড়া অন্য কোন কথা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়:২০৩০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর