চট্টগ্রাম: নাশকতার হুমকি পাবার পর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথ থেকে যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছেনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বিমানবন্দরে ককটেল হামলাসহ যে কোন ধরনের নাশকতা ঘটানো হতে পারে বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশকে তথ্য দেয়। বুধবার রাতেই পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক করে সংস্থাটি।
এরপর রাত ৯টা থেকে বিমানবন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্য।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভোরে বিমানবন্দরে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। এরপর পুলিশের অনুরোধে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রী ছাড়া কাউকেই মূল প্রবেশপথ পার হতে দিচ্ছেনা। রাত থেকে বিমানবন্দর নিয়ে আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। ’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাশকতার আশংকায় রাতভর কক্ষ, গ্যালারিসহ পুরো বিমানবন্দর জুড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় সন্দেহভাজন দোকানপাট, লোকজনকে তল্লাশি করে পুলিশ। পুরো এলাকায় টহল দেয় র্যাব ও পুলিশের আলাদা, আলাদা টিম।
এছাড়া বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথে ব্যারিকেডের সামনে পুলিশ ও আনসার সদস্য মিলে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছে। যানবাহন এবং যাত্রীদের তল্লাশির পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্দেহজনক মনে হলে তাদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে।
এডিসি মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, বুধবার রাত থেকে ৫০ জন পুলিশ সদস্য, ৫০ জন আনসার এবং অতিরিক্ত ৩৫-৪০ জন র্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের বিমানবন্দরের সামনে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ভিআইপি গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে একটি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা সাহাবউদ্দিন (২৭) নামে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের এক কর্মচারীকে আটক করেন।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাহাবউদ্দিন জানায়, জামায়াত সমর্থক সাহাবউদ্দিনকে ওইদিন মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের এক কর্মীসহ দু`জন এসে ককটেলের প্যাকেটটি দিয়ে যায়। এসময় সাহাবউদ্দিন ককটেলসহ বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেন। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কর্মচারী হওয়ায় তাকে সন্দেহ করেনি বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা।
মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য ভিআইপি কার পার্কিংয়ের স্থান ফাঁকা পেয়ে বিমানবন্দরের দোতলার জানালা দিয়ে ককটেল ছুঁড়ে আবার নিচে নেমে ইউনাইটেডের অফিসে চলে যায় সাহাবউদ্দিন।
ওই ঘটনার পর থেকেই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্ক অবস্থায় আছে প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।