চট্টগ্রাম: ভারত থেকে আমদানি হওয়া প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ১৯টাকা। এ পেঁয়াজ চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেই বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
শনিবার পাইকারী ও খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধেক দাম কমে যাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে ক্রেতারা। তবে প্রশাসন বাজার পর্যবেক্ষণ করলে পেঁয়াজের দাম আরো কমতো বলে দাবি করেন ক্রেতারা।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি পেঁয়াজের দাম কমলেও অবরোধে গাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম আর কমানো যাচ্ছে না।
শনিবার পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দু’দফা দাম কমানোর কারণে ভারতেও পেঁয়াজের দাম অনেক কমেছে। ১৬ ডিসেম্বর প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্যে নির্ধারণ করে ৮০০ডলার। যা আগে ছিল ১ হাজার ১৫০ ডলার। পরে ১৯ ডিসেম্বর আরেক দফা কমিয়ে করা হয় ৩৫০ ডলার। এ অনুযায়ী বাংলাদেশী টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজে রপ্তানি মূল্যে পড়বে ২৭ টাকা ২১ পয়সা।
কিন্তু ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম কমানোর পর ভারত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করা হয় ১৪ টাকা ৩৭ পয়সায়। বেনাপোল ও ভোমরা বন্দর থেকে খাতুনগঞ্জে আসা পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া পড়েছে ৭০ হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়াসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ১৯ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে এ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে।
কাঁচা পণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যান সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বাংলানিউজকে বলেন, ‘অবরোধ না থাকলে পেঁয়াজের সরবরাহ আরো বাড়ত। এতে দাম আরো কমে যেত। এখন যে পেঁয়াজ বাজারে আসছে তা আগের কেনা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। তবে বাজারে পণ্যে প্রবেশ করায় দাম অর্ধেকের চেয়ে বেশি কমেছে। ’
খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নগরীর কাজির দেউরী বাজারে শনিবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের বাইরে অলিগলির দোকানে এ দাম ৭০-৮০ টাকা।
কাজীর দেউরী খান ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ব্যবস্থাপক প্রদীপ কুমার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন,‘দাম অনেকে কমেছে। আগের কেনা থাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ’
আলী এরশাদ নামে এক ক্রেতা জানান, পেঁয়াজের দাম অনেক কমেছে। দু’সপ্তাহ আগেও ১৩৫টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কিনেছি। খুচরা বাজার দেখার তো কেউ নেই। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দাম নেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি করা হলে দাম আরো কমে যেত।
১৫ ডিসেম্বর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানানো হয়। এছাড়া অবরোধে পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলেও পণ্য পরিবহনে কোনো ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহন করেছে।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে বলতে পারবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।