ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘শুভ্র সুন্দর প্রীতি উজ্জ্বল, নব আনন্দে জাগ’

‌আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৩
‘শুভ্র সুন্দর প্রীতি উজ্জ্বল, নব আনন্দে জাগ’ ছবি: উজ্জ্বল ধর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: উত্তরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নগর জীবনেও জেকে বসছে শীত।

বিকেলের বয়স কমছে। বছরটাও বিদায় নেওয়ার পথে।
দরজায় কড়া নাড়ছে ক্রিসমাস। আলো ঝলমল করছে খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের বাড়িগুলো। উপহারের ঝুলি নিয়ে আসছে সান্তা ক্লজ।

প্রায় দু’হাজারের বছরের বেশি দিন আগে ২৫ ডিসেম্বর এমনি দিনে পৃথিবী আলোকিত করে বেথেলহেমের গোয়ালঘরেই জন্ম নিয়েছেন যীশু খ্রীস্ট। এই দিন প্রধান ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন। এদিনটিকে বলা হয় বড়দিন। এদিনটিতে আনন্দ উৎসবের আলোয় ভরিয়ে তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন।

তবে এবার বড়দিনের আগে বিরোধী জোটের অবরোধ ঘোষণা থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন। এটাকে তারা ধর্মীয় উৎসবে বাধা হিসেবে দেখছেন।

দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশকে সামনে রেখে এবারের বড়দিনে গির্জায় গির্জায় করা হবে বিশেষ প্রার্থনা। দু’হাজার বছর আগে স্বর্গের দূতেরা যীশুর জন্মবারতা জানিয়ে যেভাবে গেয়ে উঠেছিলেন সেভাবে সবাই গেয়ে উঠবেন, ‘ঊর্ধ্বলোকে ঈশ্বরের মহিমা এবং পৃথিবীতে তাঁহার প্রিয়পাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি। ’

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায় বেথলেহেমের সেই আবহ সৃষ্টি করতে তাদের বাড়িতে তৈরি করেছে প্রতীকী গোশালা। চট্টগ্রামের সব গির্জা ও হোটেলেগুলো বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জায় সাজছে। গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন করে।

গির্জা ও তিন তারা হোটেলগুলোতে টুকটুকে লাল পোশাক পরা সফেদ দাড়ি-গোঁফের বুড়ো সান্তা ক্লজ উপহারের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ছোট্ট সোনামণিদের হাতে তুলে দিবেন মজার মজার উপহার।

চট্টগ্রাম ক্যাথলিক ধর্ম প্রদেশের সচিব মানিক ডি কস্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বড়দিনের আগে অবরোধ দিয়ে ধর্মীয় কাজে বাধা দেয়া হয়েছে। এতে সারাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন মর্মাহত হয়েছে। তবুও আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন পালন করতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওই দিন দেশের কল্যান কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। ’

বড়দিন উপলক্ষে হোটেল পেনিনসুলা ও হোটেল আগ্রাবাদ নিয়েছে বিশেষ আয়োজন। হোটেলের লবি সাজানো হয় বর্ণাঢ্য সাজে। হোটেল পেনিনসুলায় থাকবে লাইভ মিউজিক শো, স্পেশাল তাকির্শ বুফে। এছাড়া সান্তা ক্লজ তুলে দিবেন মজার মজার উপহার।

পেনিনসুলার ব্যবস্থাপক মোসতাক লুহার বাংলানিউজকে বলেন, বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন রয়েছে পেনিনসুলায়। এছাড়া যারা আগে থেকে বুকিং দিবেন তাদের জন্য ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।

হোটেল আগ্রাবাদে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় থাকবে ‘ক্রিসমাস ইভ ডিনার উইথ ক্যানডাল’। ২৫ ডিসেম্বর সান্তা ক্লজ শিশুদের হাতে উপহার তুলে দিবেন। এছাড়া হোটেলে অবস্থানরত সকলকে দেওয়া হবে ক্রিসমাস কেক। ২৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার্কিশ বুফের আয়োজন থাকবে বলে জানিয়েছেন হোটেল আগ্রাবাদের সিনিয়র ম্যানেজার শাহীন মোহাম্মদ নওশাদ।

বড়দিনে খ্রিস্টের দিব্য জ্যোতিতে জীবন আলোকিত করতে প্রার্থনায় নত হবেন খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের লোকজন। ওই দিন সম্বস্বরে গেয়ে উঠবেন ‘নব আনন্দে জাগ, আজ নব আনন্দে জাগ, সব রবি জীবনে জাগ, শুভ্র সুন্দর প্রীতি উজ্জ্বল, নব আনন্দে জাগ। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৩

সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।