ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নিরুত্তাপ নির্বাচনেও পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ প্রার্থীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৩
নিরুত্তাপ নির্বাচনেও পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ প্রার্থীদের

চট্টগ্রাম: প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন নিরুত্তাপ নির্বাচনেও চট্টগ্রামের কয়েকজন প্রার্থী পরস্পরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে শংকাও প্রকাশ করেছেন কয়েক প্রার্থী।



রোববার চট্টগ্রাম জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের ১৫ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় কয়েক প্রার্থী পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সভাস্থলে মৃদু উত্তেজনাও ছড়ায়।

নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় ছয় আসনের মধ্যে তিন আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীই উপস্থিত ছিলেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সভায় চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, পটিয়ায় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ভোটকেন্দ্রে আসতে চান। ‍আমার ধারণা, আমাদের এমপি সাহেব (শামসুল হক চৌধুরী) প্রশাসনকে ব্যবহার করে নাশকতাকারী হিসেবে তাদের চিহ্নিত করে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেবেন না। তারা কেন্দ্রে আসতে পারলে তাদের ভোট আমি পাব।

এসময় বর্তমান সাংসদ ও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শামসুল হক চৌধুরী তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেন, এভাবে অভিযোগ করা ঠিক হচ্ছেনা। আসুন, আমরা দু’জনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একসঙ্গে কাজ করি।

এসময় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হলে জেলা প্রশাসক জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি নিশ্চিত থাকেন, কাউকে কোন ধরনের হয়রানি করা হবেনা। নির্বিঘ্নে সবাই ভোটকেন্দ্রে আসতে ‍পারবেন।

সভায় চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি তার প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ড.মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন।

ভাণ্ডারি বলেন, ড.মাহমুদ হাসান হাইকমাণ্ডের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করছেন। তিনি আসলে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতের এজেণ্ট। ফটিকছড়িতে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজত মিলে নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনা করছে যাতে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে।

ভাণ্ডারির এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ড.মাহমুদ হাসান বলেন, কোন ইউনিয়নে কত ভাগ ভোট কাস্ট হবে তা ভাণ্ডারিরা নির্ধারণ করে ফেলেছেন। উনার (ভাণ্ডারি) লোকজন মানুষজনকে ধমক দিচ্ছেন। দক্ষিণ ফটিকছড়িতে প্রত্যেক নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকে। অথচ এবার সেনাবহিনীকে রাখা হচ্ছে উপজেলা সদরে।

দু’জনই বক্তব্য দেয়ার সময় পরস্পরকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় কিছুটা বাকবিতণ্ডাও হয়।

সাতকানিয়ার বিএনএফ প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কাদেরি নিজের এবং তার বাড়িঘরের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আপনারা প্রার্থীরা, আমরা সরকারি কর্মকর্তারা যদি নিরাপত্তাহীনতার কথা বলি তাহলে কিভাবে হবে। সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দেড় লাখ পুলিশ দিয়ে ১৪ কোটি মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। ’

সভায় চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের আবু রেজা নেজাম উদ্দিন নদভী এবং চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের সদ্য মনোনয়ন পত্র বৈধ হওয়া মাহফুজুর রহমান মিতা উপস্থিত ছিলেন না। তবে তারা একজন করে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন।

সভায় সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনী আচরণবিধি, নির্বাচনী গেজেট বিতরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন আনোয়ারার নারায়ন রক্ষিত ও তপন চক্রবর্তী এবং বাঁশখালীর মোস্তাফিজুর রহমান ও এএম হায়দার আলী প্রমুখ।

সভায় রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেন, ‘নির্বাচনের দিন মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করবে। মোবাইল নেটওর্য়াক বন্ধ থাকবে না। মানুষকে নিরাপদে ভোট কেন্দ্র আসতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ বাধা দিলে কঠোর হবে প্রশাসন। যারা নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে তাদের তালিকা দেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।