চট্টগ্রাম: ঢাকার বকশিবাজারে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে চট্টগ্রাম নগরীতে গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। নগর ছাত্রদলের একদল কর্মী বুধবার দুপুরে ঝটিকা মিছিল করে দু’টি গাড়ি ভাংচুর করেছে।
ভাংচুর শেষে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বকশিবাজারে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ এনে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মো.সিরাজউল্লাহ’র নেতৃত্বে কাজির দেউড়ি থেকে একটি মিছিল বের হয়।
মিছিলটি কাজির দেউড়ি থেকে নাসিমন ভবন ঘুরে মেহেদিবাগের দিকে আসার সময় ব্যাটারি গলির মুখে নেতাকর্মীরা হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে থাকা বিএসআরএম’র ডিভাইডারগুলো এলোমেলো করতে শুরু করে। এসময় কয়েকজন বড় বড় ইটের টুকরা রাস্তায় থাকা বিভিন্ন গাড়ি লক্ষ্য করে ছুঁড়তে থাকে। এতে একটি সিএনজি অটোরিক্সা ও একটি প্রাইভেট কারের সামনের কাঁচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতংকে পুরো এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
সিএনজি অটোরিক্সার (চট্টমেট্রো-থ-১২-১২৩৭) চালক মো.সোলায়মান বাংলানিউজকে বলেন, শ্লোগান দিতে দিতে ১৫-১৬ জন যুবক ব্যাটারি গলির মুখে এসে প্রথমে আমার গাড়িতে হামলা চালায়। একটি প্রাইভেট কারে ইট ছোঁড়ার পর সেটি দ্রুত চলে গেছে।
এসময় সময় টেলিভিশন ও একুশে টেলিভিশন ছাত্রদলের মিছিলের সংবাদ সংগ্রহ করছিল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভাংচুর শেষে চলে যাবার পর ওই এলাকায় নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এম এ মান্নানের বাসভবনের গলি থেকে ৩০-৪০ জন যুবক বের হয়। তারা কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ঘিরে ফেলে তাদের উপর চড়াও হয়। নিজেদের কখনও আওয়ামী লীগের কর্মী, কখনও সাধারণ জনতা পরিচয় দিয়ে তারা সময় টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন নূর জামাল আতিক এবং একুশে টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন মো.মাসুমকে লাঞ্চিত করে।
ঘটনাস্থলে থাকা সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক হাজেরা শিউলি বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল করবে খবর পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে আসি। এসময় ভাংচুর চলছিল। আমরা ফুটেজ ও তথ্য সংগ্রহ করে চলে যাবার সময় কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক এসে আমাদের উপর হামলা চালাতে উদ্যত হয়।
এসময় সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক পার্থপ্রতীম বিশ্বাসসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন চকবাজার থানার একটি টিম। তারা সাংবাদিকদের উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের কবল থেকে উদ্ধার করলেও তাদের কাউকে আটক করেনি।
এস আই মো.আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, সাংবাদিকরা ভাংচুরকারীদের উৎসাহিত করেছে কেউ এমন গুজব ছড়িয়েছে। এরপর কয়েকজন যুবক উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
ভাংচুরের বিষয়ে নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মো.সিরাজউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছি। মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়ায় উত্তেজিত কর্মীরা গাড়ি ভাংচুর করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪