ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মধ্য পৌষে কুয়াশার চাদরে ঢাকা চট্টগ্রাম

আবদুল্লাহ্ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪
মধ্য পৌষে কুয়াশার চাদরে ঢাকা চট্টগ্রাম ছবি: সোহেল সরওয়ার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: মধ্য পৌষে চট্টগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। ঢেকে গেছে ঘন কুয়াশার চাদরে।

দৃষ্টিসীমা কমে আসায় যানবাহন ও বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে রেলেরও।
কমে আসছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও।

শনিবার সাড়ে ছয়টায় চট্টগ্রামে সূর্যোদয় হলেও বেলা সাড়ে এগারটায়ও সূর্যের দেখা মিলেনি। গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে দরিদ্র ও কর্মজীবী মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি, সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৮ডিগ্রি। শনিবার সর্বনিম্ন ১৫ ডিগ্রি। বাংলাদেশে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেট ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ইশ্বরদীতে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি।

এছাড়া রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ যশোর,  কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও টাঙ্গাইল অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা  অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

এ অবস্থা আরও দুই তিনদিন থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পতেঙ্গা কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তা নীলুফার জাহান।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টি সীমা কমে আসায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে নিয়মিত সিডিউল বিলম্বিত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ রুটেও দুটি ফ্লাইট চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত যেতে পারেনি।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার নূর-ই-আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘বিমান চলাচল বন্ধ হয়নি। ঘন কুয়াশার কারণে ফ্লাইট ওঠা-নামা বিলম্ব হয়েছে। দুইটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে নামতে না পেরে ঢাকায় অবতরণ করেছে। পৌনে দশটা থেকে তা স্বাভাবিক হয়েছে। কোন কোন ফ্লাইট দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্ব হয়েছে। ’’’

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে শিডিউল ঠিক থাকলেও রেল চলাচলে গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা ফিরোজ ইফতেখার বাংলানিউজকে বলেন,‘যথা সময়ে সব ট্রেন ছেড়ে গেছে। তবে কুয়াশার কারণে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ’

ঘন কুয়াশায় দৃষ্টি সীমা কমে আসায় দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ যানবাহনের গতিও ছিল সীমিত।

বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো নিউমোনিয়া। আর শীতকালেই এর প্রকোপ বেশি। এছাড়া শীত শুরু হওয়ায় ডায়রিয়া, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। ঠান্ডায় বৃদ্ধদেরও হাপানি রোগ দেখা দিতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শিশু রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন,‘শীতে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে শিশুরা আক্রান্ত হতে পারে। শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। মায়ের দুধই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এসময় শিশুদের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ থেকে দূরে রাখতে হবে। ’

তিনি বলেন,‘শিশুদের ডায়রিয়া সাধারণত স্বল্পস্থায়ী। পানিশূন্যতা পূরণ, ঘন ঘন বুকের দুধ ও স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো ছাড়া আর কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। ৭-১০ দিনের মাথায় প্রায় সব বাচ্চা সুস্থ হয়ে ওঠে। তা ছাড়া বেশির ভাগ ডায়রিয়া ভাইরাসজনিত বলে অ্যান্টিবায়োটিকেরও প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু দুই সপ্তাহের পরও যদি ডায়রিয়া না সারে এবং শিশু গুরুতর বা মধ্যমমাত্রার পানিস্বল্পতায় ভোগে, তবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। ’

নিউমোনিয়া প্রসঙ্গে ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন,‘উপসর্গের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে তিন ধরনের নিউমোনিয়া রয়েছে। খুব মারাত্মক, মারাত্মক ও সাধারণ নিউমোনিয়া। মারাত্মক বা খুব মারাত্মক লক্ষণগুলো না থাকলে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি না করে মুখে খাবার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। এই চিকিৎসায় যদি শিশুর জ্বর কমে যায়, শিশু ভালোমতো খেতে পারে ও অবস্থার উন্নতি হয়, তবে নির্দেশনামতো পাঁচ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক পূর্ণ মেয়াদে শেষ করতে হবে। যদি উন্নতি না হয়ে বরং মারাত্মক বা খুব মারাত্মক লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।