ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার

বনফুল ও মধুবন’র দণ্ড ৩০ লাখ টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
বনফুল ও মধুবন’র দণ্ড ৩০ লাখ টাকা ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: বনফুল অ্যান্ড কোং এবং মধুবন ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরিকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহারসহ ‘শোরুমে ‘অবিক্রীত’ পণ্য পুনরায় প্রক্রিয়া করা’র মতো গুরুতর অনিয়মের অভিযোগে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বনফুলের ৫০-৬০ মণ পচা মিষ্টি নালায় ফেলে দেওয়া (ডাম্পিং) করা হয়েছে।



র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম মঙ্গলবার রাতে নগরীর বায়েজিদ থানার শেরশাহ ও পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকায় দুই প্রতিষ্ঠানের কারখানায় অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন। বিএসটিআই’র সহযোগিতায় পরিচালিত অভিযানে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ ও ভোক্তা অধিকার আইন লঙ্ঘনের দায়ে এসব জরিমানা করা হয়।


ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি, সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘনচিনি (স্যাকারিন) ও পুরোনো শিশা ব্যবহার করায় বনফুলকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া মুরাদপুরের ৩৮৪ হাটহাজারী সড়কের মধুবনের কারখানাটিতে  নুডলস, বিস্কুট, চানাচুরসহ বিভিন্ন পণ্যে তৈরির অগ্রীম তারিখ বসানো ও ক্ষতিকর দ্রব্য ব্যবহার করায় মধুবনকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মধুবনের কারখানার শ্রমিকরা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানিয়েছেন, ওই কারখানায় খাদ্যপণ্য তৈরিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল, শিল্পে ব্যবহৃত (ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড) অ্যাসিডসহ বিভিন্ন উপাদান বিস্কুট তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, মধুবনের বিস্কুট কারখানায় আমরা কিছু নুডলস, সেমাই পেয়েছি যেগুলো দেড় মাস আগে তৈরি হলেও সেমাইয়ের মোড়কে উৎপাদনের তারিখ লেখা হয়েছে ‘মার্চ ২০১৬’। এ ধরনের প্রতারণা আমরা আগে কোনো অভিযানে দেখিনি।

বনফুলের কারখানার পরিবেশ অত্যন্ত বাজে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বনফুলের কারখানায় দেখা গেছে বিভিন্ন শোরুম থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট যেসব প্লাস্টিক কৌটা ভর্তি মিষ্টি ফেরত এসেছে সেগুলো পুনরায় নতুন তৈরি মিষ্টির সঙ্গে মিশিয়ে আবার কৌটা ভরা হচ্ছে। কিছু পণ্য পাওয়া গেছে যেগুলো মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি)তৈরি হলেও সিল মারা হয়েছে ‘৭ জানুয়ারি’। এর অর্থ হচ্ছে একদিকে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে অন্যদিকে খাদ্যপণ্যে গোপনে প্রিজারভেটিভ মেশানো হয়েছে যাতে বেশিদিন খাবারগুলো ভালো দেখায়।

তিনি বলেন, ১৯৮২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ঘনচিনি মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণ হওয়ায় ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও সস্তায় খাবারকে বেশি মিষ্টি করার জন্য বনফুল ও মধুবন তাদের পণ্যে এটি ব্যবহার করছে। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ রং, জেলি, বেকিং পাউডার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের রাসায়নিক যৌগ ব্যবহার করা হচ্ছিল কারখানায় বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরিতে।

বিএসটিআই’র উপ-পরিচালক (মেট) মো. শওকত ওসমান বাংলানিউজকে জানান, নিরাপদ খাদ্য প্রতিটি মানুষের অধিকার। খাদ্যদ্রব্যের মান বজায় রাখার জন্য এ ধরনের অভিযান আগামী দিনে আরও জোরদার করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
এআর/টিসি

** ‘এত পচা মিষ্টি, কবে বানিয়েছিল জানে না কারিগরও’ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।