সূত্রমতে, মন্ত্রীদের মতো সংসদ সদস্যদেরও যে কোন এলাকায় অবস্থান এবং কর্মসূচির বিষয়টি নগর ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার মাধ্যমে মনিটরিং এবং সেই অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এজন্য সিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে নগর পুলিশের বিশেষ শাখার কাছে চট্টগ্রামে সংসদ সদস্যদের বাসার পূর্ণাঙ্গ ঠিকানাসহ তালিকা চাওয়া হয়েছে।
এরপর মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) নগরীর ১৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে তাদের এলাকায় চট্টগ্রাম কিংবা চট্টগ্রামের বাইরের কোন সংসদ সদস্যের বাসা ও অফিস আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর খুলশী, বায়েজিদ বোস্তামিসহ চারটি থানা থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য বিশেষ শাখায় পৌঁছেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রমতে, নগরীতে সংসদ সদস্যদের বাসা এবং অফিসের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির পর সাংসদের অবস্থানকালীন সময়ে সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া সংসদ সদস্যরা নগরীর ভেতরে যে কোন কর্মসূচিতে যাবার সময়ও যাতে নিরাপত্তা দেয়া হয় তার উদ্যোগও নিচ্ছে সিএমপি। এজন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে চট্টগ্রামে পৌঁছানোর আগে তাদের শিডিউল নগর পুলিশের বিশেষ শাখাকে ব্যক্তিগত কর্মকর্তার মাধ্যমে অবহিত করার অনুরোধ করা হবে।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, গাইবান্ধায় যে ঘটনা ঘটেছে, এরপর সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমরা তাদের নিরাপত্তা দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক ফোর্স দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি।
‘চট্টগ্রাম নগরী এমন এক এলাকা যেখানে শুধু চট্টগ্রামের সংসদ সদস্যের বাসা কিংবা অফিস আছে সেটাই নয়। চট্টগ্রামের বাইরের সংসদ সদস্যদের বাসা-অফিসও আছে। সাপ্তাহিক ছুটিতে অনেক সংসদ সদস্য নগরীতে এসে অবস্থান করেন। এখন থেকে আমরা সংসদ সদস্যদের অবস্থান এবং নিরাপত্তার বিষয়টি মনিটরিং করব। ’ বলেন দেবদাস ভট্টাচার্য।
সূত্রমতে, নগরীর বাইরের সংসদ সদস্যদের এলাকায় অবস্থানকালীন সময়ে সার্বক্ষণিক একটি টিম রাখার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে থানাগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, সংসদ সদস্যরা শুক্র ও শনিবার গ্রামে অবস্থান করেন। আমাদের রেডবুক অনুযায়ী এমপিদের সিকিউরিটি ও প্রটেকশন দেয়ার সুযোগ নেই। তারপরও পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে সার্বক্ষণিক টিম দেয়ার জন্য থানাকে বলা হয়েছে।
‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি, কোন সংসদ সদস্য যদি নিরাপত্তার প্রয়োজনে অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন তাহলে আমরা জরুরি ভিত্তিতে তিনি যেন সেটা পান সেই ব্যবস্থা করব। সাধারণত অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে নিরুৎসাহিত করার একটা নীতি আছে। এক্ষেত্রে আমরা সেই নীতি প্রয়োগ করব না। ’ বলেন রেজাউল মাসুদ।
গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহাবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে সংসদ সদস্য লিটনকে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় মোটরসাইকেলে আসা হামলাকারীরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এই হত্যাকান্ডের জন্য জামায়াতসহ উগ্রবাদী শক্তিকে দায়ী করে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
আরডিজি/টিসি