দুই শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দুজনই অতীতে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মহিউদ্দিন প্রতিবছর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগ দেন।
জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রণি বাংলানিউজকে বলেন, নাছির ভাই গত বছর সিটি করপোরেশনের ত্রৈমাসিক সভার কারণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যেতে পারেননি।
নগর ছাত্রলীগের বিবাদমান দুটি অংশের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন অংশটি মহিউদ্দিন অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মেয়রের অনুসারী হিসেবে পরিচিত অপর অংশটি নগরীর জে এম সেন হলে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেছে।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের কর্মসূচিতে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের মধ্যে হানাহানি বিদ্বেষ যেন না হয়। কোথাও কিছু হলে, তোমরা কর আর না কর, ছাত্রলীগের নাম আসে। পত্রিকার পাতায় ছাত্রলীগের নামে কোন নিউজ যেন আর না পাই। পত্রিকায় তোমাদের নাম দেখলে অন্তরে ব্যথা লাগে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি কেন হবে ? খুনোখুনি করবে না। একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরবে। ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দেবে। এমইএস কলেজ, সিটি কলেজ আলাদা-আলাদা নামে স্লোগান দিলে মনে হয় বিভক্তি আছে। ’ বলেন মহিউদ্দিন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, জামায়াতকে বন্ধু বানানোর দরকার নেই। বাসায় গিয়ে পরিবারের মধ্যে বলবে, কেউ যেন জামায়াতের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করে। যে জামায়াত করে তাকে বলবে, জামায়াত করবেন না।
আওয়ামী লীগকে ২০১৯ সালে আবারও ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসবে আসবে বলে ঘরে বসে থাকলে হবে না। কাজ করতে হবে। মানুষের মন জয় করতে হবে।
‘কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে যাদের বাসা তারা রাতে নাকি ঘুমাতে পারে না। খালি গোলাগুলির শব্দ হয়। এগুলো করার পর যদি আমরা ভোট চাইতে যাই মানুষের কাছে, মানুষ ভোট তো দেবে না, ঝাঁটা দিয়ে পেটাবে। ’
এসময় কর্তব্যরত এক সংবাদকর্মীকে উদ্দেশ্য করে মহিউদ্দিন বলেন, ‘কাক্কু, এই কথাগান ন লেইখ্য বাজি। ’ (চাচা, এই কথাটা লিখবে না। )
একই সমাবেশে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ এমন এক সংগঠন যে সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। ছাত্রলীগ যুগে যুগে অসংখ্য দেশপ্রেমিক মেধাবী রাজনীতিকের জন্ম দিয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তোমাদের সত্যিকারের সুনাগরিক হতে হবে। নীতিবান, আদর্শবান, দেশপ্রেমিক হতে হবে। সংগঠনের নীতি, আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে নিজেদের সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আগামীতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগ যাতে আবারও সরকার গঠন করতে পারে সেজন্য ছাত্রলীগ রাজপথে সজাগ থাকবে। শুধু ২০২১ সাল নয়, ২০৪১ সাল পর্যন্ত যাতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে এই দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেজন্য ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাবে।
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রণি বলেন, ছাত্রদের হাতে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে দিতে হবে। ছাত্রলীগের হাতে ছাত্রলীগের রাজনীতি ফিরিয়ে দিতে হবে। তখনই ছাত্রলীগ থেকে সুনেতৃত্ব গড়ে উঠবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘন্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
আরডিজি/আইএসএ/টিসি