ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খেজুর রসে তৃষ্ণা মেটায় বুলবুলি আর কাঠবেড়ালি

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
খেজুর রসে তৃষ্ণা মেটায় বুলবুলি আর কাঠবেড়ালি খেজুর রসে তৃষ্ণা মেটায় বুলবুলি আর কাঠবেড়ালি। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা। সঙ্গে এক পেয়ালা গরম খেজুর রস। শীতের সকালে আর কি চাই! বাঙালি মাত্রই নষ্টালজিক হন। ফেলে আসা সোনালি দিনগুলোর স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান। কিন্তু রস পাবেন কই? রসের খোঁজ পেতে হলে চাই গাছের খোঁজ। তারপর গাছির বাড়ি।

শিমের জন্য বিখ্যাত সীতাকুণ্ডে বইছে খেজুর রসের নহর। বিশেষ করে মুরাদপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধেই আছে কয়েক হাজার খেজুরগাছ।

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন গাছিরা। সকাল-সন্ধ্যায় তাদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়বেই।
ভোর বেলাতে জমে ওঠে খাঁটি রসের মেলা। ড্রামে, কলসিতে ভরে সেই রস চলে যাচ্ছে দূরদূরান্তে। এমনকি ইট-পাথরের খাঁচায় বন্দী শহরের কিচেনেও।

খাঁটি রসের মেলা শুধু নয়। আরেকটি মেলাও জমে উঠেছে। সেটি পাখির মেলা। বুলবুলি, শালিক, ময়না তো বটে। কাক আর কাঠবেড়ালিকেও দেখা গেল খেজুর রসে তৃপ্ত হতে। এত পাখির ওড়াওড়ি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। খেজুর রসে তৃষ্ণা মেটায় বুলবুলি আর কাঠবেড়ালি

ফকিরহাট ফেরিঘাট এলাকার বেড়িবাঁধে কথা হয় রস বেপারি মোহাম্মদ আলীর (২৫) সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর বেড়িবাঁধ থেকে ১৬ টাকায় রস কিনে শহরে নিয়ে ৪০ টাকা লিটার বিক্রি করেছিলাম। শহরে প্রচুর চাহিদা আছে রসের। এবারও বেশি শীত পড়লে যখন প্রচুর রস পাওয়া যাবে তখন ব্যবসা শুরু করবো।

বেলাল হোসেন নামের স্থানীয় একজন বৃদ্ধা বললেন, এখানকার গাছগুলোতে প্রচুর রস মেলে। শেষ বিকেলে কলসি বসালে সকালের আজানের সময় ভরে যায়। শুধু বেড়িবাঁধ নয়, পুরো সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকা, বিভিন্ন শিল্পকারখানার জায়গা, ভিটেবাড়ি ও রাস্তার ধারে প্রচুর খেজুর গাছ আছে।

সীতাকুণ্ড কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র নাথ বাংলানিউজকে জানান, ১০ বর্গমিটারে একটি খেজুরগাছ হিসাব করলে উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ আছে। আনুমানিক প্রায় সাড়ে চার হাজারের মতো। একেকটি গাছে দৈনিক গড়ে আড়াই লিটার রস পাওয়া যায়। কয়েক হাজার খেজুরগাছ আছে বেড়িবাঁধে

তিনি জানান, সীতাকুণ্ডে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর রসের গুড় তৈরি হয় না। তবে স্থানীয়রা রস জ্বাল দিয়ে একধরনের মিঠা তৈরি করে। যাকে বলা হয় ‘রাব’। ওই রাব দিয়ে রকমারি পিঠাপুলি খাওয়া হয়।

বেড়িবাঁধে কয়েক হাজার খেজুরগাছ থাকলেও সে ব্যাপারে তেমন কিছু জানে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বোর্ডের ভূমি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খেজুর গাছ ইজারা বাবদ কোনো টাকা পায় না পানি উন্নয়ন বোর্ড। জনবল সংকটের কারণে এসব বিষয় দেখভাল করার ফুরসতও মিলছে না।        

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।