সূত্রমতে, বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে তার বাসায় কাদের যাতায়াত ছিল এই বিষয়ে তথ্য নিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এখন সেই তথ্য অনুযায়ী তালিকা ধরে বাসায় যাতায়াতকারীদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তিনি।
জানতে চাইলে এডিসি মো.কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মামলার বাদির (বাবুল আক্তার) বাসায় যাদের যাতায়াত ছিল তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এর মধ্যে বাদির খালাত ভাই মফিজকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
মফিজ নগরীর সিইপিজেডে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আছে বলে জানিয়েছেন কামরুজ্জামান।
সূত্রমতে, মিতু হত্যাকান্ডের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের অদূরে একটি হাসপাতালের গেইটে সাইফুল নামে এক যুবকের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদের ইচ্ছার কথা বাদি বাবুল আক্তারকে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে বাবুল আক্তার সাইফুলের অবস্থানের বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে এডিসি কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সাইফুলকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই। তার অবস্থান আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। হত্যাকান্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাইফুল নিজেকে বাবুল আক্তারের চাচাত ভাই হিসেবে পরিচয় দিত বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে।
পর্যায়ক্রমে বাবুল আক্তারের বাসায় যাতায়াতকারীকে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন এডিসি কামরুজ্জামান।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তার, ২২ ডিসেম্বর শ্বশুর মোশাররফ হোসেন এবং ১ জানুয়ারি বাবুল আক্তারের মা-বাবাকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গত বছরের ৫ জুন ভোরে নগরীর ও আর নিজাম রোডে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম ওরফে মিতু। এই ঘটনায় স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকান্ডের পর গত ২৪ জুন রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে ইঙ্গিত করে খবর প্রকাশ হয়।
মিতু হত্যা মামলায় এই পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই মামলার দুজন আসামি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। দুজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছে, মুছার নির্দেশে এবং তদারকিতে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হয়েছিলেন বাবুল আক্তার। হত্যাকান্ডের আগের দিন তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ সুপার পদে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। স্ত্রী হত্যার পর বাবুল আক্তার ঘটনা পরিক্রমায় চাকরিতে ইস্তফা দেন। বর্তমানে তিনি একটি হাসপাতালে যোগ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৭
আরডিজি/টিসি