বালিশ কাণ্ড
রূপপুরের পর্দা বিতর্কের পর চলতি বছরের অক্টোবরে সামনে আসে বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা বালিশকাণ্ড। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক একটি বালিশের কাভার কিনতে খরচ দেখানো হয় ২৮ হাজার টাকা।
ম্যাক্স হাসপাতাল
শিশুমৃত্যু আর ম্যাক্স হাসপাতালে যেন একই সূত্রে গাথা। শিশু মারা যাবে আর ম্যাক্স হাসপাতালের নাম আসবে না তা যেন মেনেই নিতে পারেন না হাসপাতলটি। তাইতো ২০১৮ সালের মতো ২০১৯ সালেও আলো্চনায় হাসপাতালটি। বছরের শেষদিকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দুই শিশু মুত্যুবরণ করলে আবারও আলোচনায় আসে হাসপাতালটি। ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে এক শিশুর অভিভাবক মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এ নিয়ে তিন ডাক্তারের সমন্বয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটিও। অন্যদিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট ভুল দেওয়ার অভিযোগ এনে আরেক নবজাতকের অভিভাবক রীতিমত আদালতে মামলা ঠুকে দেন এ হাসপাতালের পরিচালকসহ দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
সাবেক সিভিল সার্জনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ঢাকা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ২০১৪-১৫ সালে জেনারেল হাসপাতালে ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় ১২ ধরনের ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৯ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ক্রয় করা যন্ত্রপাতিতে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি এমআরআই মেশিনের দাম দেখানো হয়েছিল ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। যা যন্ত্রপাতির বাজার মূল্যের সঙ্গে দেখানো ক্রয়মূল্যের বিস্তর তফাত পায় দুদক।
সিভিল সার্জনের রঙ্গমঞ্চ
বছরের সেরা বিনোদনের খোরকটি জুগিয়েছিলেন চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। গাড়িতে বসে বন্ধুর সঙ্গে ‘মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা’ গান গেয়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হন এ সিভিল সার্জন। তবে বিষয়টিকে মোটেও সুনজরে দেখেননি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এনিয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক বার্তা দেয় মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয় এক নারী চিকিৎসককে দুই বছর ধরে উত্ত্যক্ত (ইভটিজিং) করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক। এতে তার বিরুদ্ধে নানা অশালীন আচরণের বিবরণ দেওয়া হয়। বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত হওয়ায় এ সিভিল সার্জনকে শেষ পর্যন্ত বদলির নোটিশ দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি
সারাদেশের মতো ডেঙ্গু চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে। এ বছর ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি হিসাবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৬৪২ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। যে এলাকাগুলো ডেঙ্গুপ্রবণ সেসব এলাকায় আমরা বছরব্যাপী প্রচারণা চালাবো। শুধু তিন মাসের জন্য বসে থাকবো না। চিকিৎসা বড় বিষয় নয়, সচেতনতা তৈরি করা বড় বিষয়। আমাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। সিটি করপোরেশনের সহযোগিতা নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হবে।
বছরের আলোচিত ইস্যু ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা তদন্ত কমিটির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তারা দু’টি সভায় মিলিত হয়েছে এবং ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। আশা করছি শিগগির তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
এমএম/টিসি