ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২২ বছর পর প্রশাসক সুজন ‘বাইক’ নিলেন যে কারণে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২০
২২ বছর পর প্রশাসক সুজন ‘বাইক’ নিলেন যে কারণে ২২ বছর পর নতুন বাইক নিয়ে নগরবাসীর কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের

চট্টগ্রাম: বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ‘ভেসপা’ মোটরবাইক নিয়ে পুরো চট্টগ্রাম চষে বেড়াতেন খোরশেদ আলম সুজন। দীর্ঘ ২০-২২ বছর পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হওয়ার পর তিনি নতুন বাইক নিলেন সোয়া লাখ টাকায়।

 

সেই বাইকে চড়ে নগরবাসীর দুঃখ, দুর্দশা দূর করার, জনদুর্ভোগ লাঘবে তাৎক্ষণিক সড়ক মেরামত, সড়কবাতি বদলানো, বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকিসহ চসিকের সেবাগুলো দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চান তিনি।  

বাংলানিউজকে সুজন বলেন, কাচঘেরা বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ে নগরবাসীর দুঃখগুলো যেমন উপলব্ধি করা যায় না তেমনি দুর্দশাগ্রস্ত এলাকাবাসী, অসহায় মানুষ যে কষ্টের কথা জানাবে সে উপায়ও থাকে না।

এ বোধ থেকেই বাইক কেনা। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম আমার বাইক নিয়ে পুরো চট্টগ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছি। বলা যায় আমার ভেসপা গাড়িটা ছিল সুপরিচিত। এখন আমি ৫টার পর চসিকের গাড়ি ছেড়ে দিই। এরপর নিজের নোহা মাইক্রোবাস ব্যবহার করি। বাইকে যে বাড়তি সুবিধা পাবো তা হলো অলিগলিতে দ্রুত যেতে পারবো। ১৮০ দিন সময় আমার। এমন কিছু কাজ করে যেতে চাই যাতে চট্টগ্রামবাসী আমাকে হৃদয়ে স্থান দেন। আমার জন্য দোয়া করেন।     

নতুন বাইক, হেলমেট নিয়ে মাস্ক পরে সুজন সোমবার (২৪ আগস্ট) নগরের বহদ্দারহাটের আরাকান সড়কে ‘ক্যারাভান কর্মসূচি’র আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জনদুর্ভোগের যে কারণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা চিহ্নিত করে সুরাহা করাটা আমার কর্তব্য। সুরাহা করতে গিয়ে যে প্রতিবন্ধকতাগুলোর সম্মুখীন হবো তা অবশ্যই অতিক্রম করে যাবো। আমার এ উদ্দেশ্য পূরণে চসিকের সব বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। এ নির্দেশনানুযায়ী অর্পিত দায়িত্ব পালনে কেউ ব্যর্থ হলে তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।  

তিনি বলেন, নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে আমি তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে নেমেছি। যেসব স্থায়ী সমস্যাগুলো আছে তার একটি স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান আমি করে যাচ্ছি। পরবর্তীতে যারা মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করবেন তারা যাতে এ নির্দেশনানুযায়ী স্থায়ী সমাধান দিতে পারেন সেজন্য নগরবাসীর পরামর্শ এবং তাদের আবেদন নিবেদন আমি জানতে চাই। এজন্য যে কেউ যেকোনো সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং এজন্য আমি মুখিয়ে আছি।  

তিনি নগরসেবায় ক্যারাভান কার্যবিধি সম্পর্কে বলেন, নগরের সড়ক ও জনপথ, ড্রেন, ফুটপাতে যে সমস্যা বিরাজমান তা মিটিং কিংবা কমিটি গঠন করে সময়ক্ষেপণ না করে সরেজমিন মাঠে থেকে তা স্পটে সমাধান করা হবে। ক্যারাভান কার্যক্রমের অধীনে চলতি পথে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, নষ্ট সড়কবাতি, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমসহ যে সব সমস্যার কারণে নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করছি।  

প্রশাসক পথচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক তুলে দিয়ে বলেন, আজ নতুন কর্মসূচির প্রথম দিন। পরবর্তীতে সপ্তাহে অন্তত একদিন এ প্রোগ্রাম নিয়ে নগরের প্রধান সড়কগুলোতে যাব। প্রধান সড়ক সম্পন্ন হলে নগরের অলিগলিতে যাব। মূলত এ কর্মসূচির মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে নাগরিক সমস্যার সমাধান ও জনসম্পৃক্ততার চেষ্টা করব। শুনবো তাদের অভিযোগ ও পরামর্শ।  

এ সময় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রশাসক। তিনি তাদের অভাব-অভিযোগগুলো শুনে তা সমাধানের দিকনির্দেশনা দেন।  

সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন সাইফু, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ সফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ, নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, রাজনীতিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ নিজু, মোরশেদ আলম, নোমান চৌধুরী চসিক প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২০
এআর/টিসি  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।