চট্টগ্রাম: ভাদ্র-আশ্বিন দু্ইমাস শরৎকাল। আগস্ট মাসের মধ্যভাগ থেকে অক্টোবরের মধ্যভাগ পর্যন্ত এই সময়ে প্রকৃতি হেসে ওঠে।
প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় আগমনী বার্তা।
স্থানটি অনন্যা আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত। সেখানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবাসিক এলাকা। কিছু কিছু স্থানে কাজ এখনও চলমান। সেখানেই আবাস গেড়েছে কাশফুল। প্রতিদিন পর্যটকরা আসছেন তার সৌন্দর্য্য দেখতে। শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
ঠিক সন্ধ্যা নামার আগ মুহুর্তের দৃশ্য অন্যরকম। প্রেমিক যুগল হাতে হাত রেখে হাঁটেন কাশফুলের মাঝ দিয়ে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। তারুণ্যের সঙ্গে শিশু কিশোরদের উপস্থিতিও চোখে পড়ে। বিকেল বেলা সাইকেল নিয়ে ঘুরতে আসেন তারা।
কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে তৈরি হয় এক ভূতুড়ে পরিবেশ। ঘটে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও। অনেক পর্যটক সন্ধ্যার পর ছিনতাইকারীদের হাতে হারিয়েছেন টাকা, মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল, স্বর্ণালংকার। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করেছেন হাসপাতালে।
সাদা ফুলের এই চাদর দেখতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালেহ আকরাম বাপ্পি বাংলানিউজকে বলেন, মন খারাপ থাকলে এখানে আসি। কিছুক্ষণ সময় কাটাই। মন ভালো হয়ে যায়।
অনন্যা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর টিপু বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় সময় পরিবার নিয়ে যাই। বর্ষার এই সময়টাতে কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো আবাসিক এলাকা। দেখতে ভালোই লাগে।
তিনি বলেন, কাশফুল বাংলার চিরচেনা শরতের সুন্দর স্নিগ্ধ ফুল। গ্রামবাংলার অপরূপ শোভা কাশবন ছিল চিরচেনা দৃশ্য। কিন্তু সেই কাশবন এখন আগের মতো চোখে পড়ে না।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায়, ‘কাশফুল মনে সাদা শিহরণ জাগায়, মন বলে কত সুন্দর প্রকৃতি, স্রষ্টার কি অপার সৃষ্টি। ’ কবি জীবনানন্দ দাশ শরৎ বন্দনায় লিখেছেন, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর’।
কাশফুলের আদি নিবাস রোমানিয়ায়। কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় একধরনের ঘাস। ঘাসজাতীয় উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটির চিরল পাতার দুই পাশ বেশ ধারালো। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি জন্মাতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২১
বিই/এসি/টিসি