চট্টগ্রাম: করোনা ভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার পর ছয় মাস পর্যন্ত করোনা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার মতো শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডির উপস্থিত থাকে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ওয়ান হেলথ ইন্সটিটিউটের সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে।
সিভাসু উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে একটি গবেষকদল কোভিড-১৯ এর অ্যান্টিবডির ব্যাপকতা (প্রিভেলেন্স) ও পরিমাণ নির্ণয়ে গবেষণা পরিচালনা করেন।
চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত এ গবেষণায় মোট ৭৪৬ জনের সেরোপজিটিভিটি বা রক্তে সার্স কোভ ২ এর অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশের দেহে অ্যান্টিবডি শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া উভয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৯ দশমিক ১৩ শতাংশ অ্যান্টিবডি ও যারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি এমন ৫০ শতাংশের দেহে প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। যারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি, তাদের শরীরে প্রাকৃতিকভাবে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এর চেয়ে গড়ে প্রায় তিন গুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে যারা ভ্যাকসিনের ১ম ডোজ নিয়েছেন। তাছাড়াও ১ম ডোজ গ্রহণকারীদের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে যারা ২য় ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, প্রথম ডোজ গ্রহণের পর ১ম মাসে গড়ে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি দেহে বিদ্যমান থাকে তার প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রাস পায় ২য় মাসে এসে। কিন্তু ২য় ডোজ টিকা নেওয়ার পর অ্যান্টিবডির পরিমাণ (গড়) সময়ের সঙ্গে হ্রাস পাওয়ার প্রবণতায় ভিন্নতা দেখা যায়।
যারা করোনা ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে, ২য় ডোজ সম্পন্ন করার দুই মাসের মধ্যে গড়ে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি থাকে চতুর্থ মাসে এসে তার প্রায় ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। কিন্তু ৬ষ্ঠ মাসে এসে তা ৪র্থ মাসের মাত্র তুলনায় মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পায়।
গবেষণকদের দাবি, টিকার ২য় ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পরেও করোনা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিবডি শরীরে উপস্থিত থাকে।
গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, টিকা নেওয়ার পর মানুষের শরীরে কি পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা জানতে আমাদের এই গবেষণা। এ গবেষণা একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে কি পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা জানা। গবেষণা পুরোপুরি শেষ হলে আমরা বিশদ আকারে জানাতে পারবো।
এ গবেষক দলে আরও রয়েছেন সিভাসু ওয়ান হেলথ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী, ডা. জাহান আরা, ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. তারেক উল কাদের, ডা. আনান দাশ, ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডা. ইয়াসির হাসিব, ডা. তাজরিনা রহমান, ইন্টার্ন ডা. সীমান্ত দাশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
এমএম/টিসি