ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তাদের বসন্ত উৎসব একটু ব্যতিক্রম

মোহাম্মদ আজহার, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
তাদের বসন্ত উৎসব একটু ব্যতিক্রম স্টলগুলোতে ছিল শতাধিক রকমের পিঠা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বসন্ত বরণ উৎসব আয়োজনের দিক থেকে তারা সবসময়ই একটু ব্যতিক্রম। এখানের শিক্ষার্থীদের আতিথেয়তা ভালো লাগার মতো।

মনে হচ্ছে নিজের বিভাগের কোনো অনুষ্ঠানেই অংশ নিয়েছি।

অনুভূতিগুলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন বিভাগ থেকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) বসন্ত বরণ উৎসবে আসা শিক্ষার্থীদের।

তারা বসন্ত উৎসব উপভোগের পাশাপাশি প্রশংসা করেন এ আয়োজনের।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশেই পাহাড়ের উঁচুতে এ ইনস্টিটিউট। সেশনজট, শিক্ষক সংকট, বিভিন্ন সময় সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনায় থাকে চবির এ ইনস্টিটিউট। তবে এসবের মাঝেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিভিন্ন উৎসব আয়োজনের দিক থেকে পিছিয়ে নেই এ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। উৎসবের দিন তারা ভুলে যান মনের সব কষ্ট আর হতাশা। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্মৃতির পাতায় লেখেন নতুন সব অধ্যায়।

'লাগলো হাওয়া এই মনে, যাই বসন্ত পার্বণে' প্রতিপাদ্যে এবারও বসন্ত বরণ উৎসব আয়োজন করেছে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। রোববার (১৩ মার্চ) বেলা ১১টায় ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বসন্ত বরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. গোলাম মহিউদ্দিন। এ ছাড়া সহযোগী অধ্যাপক আমির উদ্দিন, ড. উদিতি দাশ, সহকারী অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, সৌমেন কিশোর নাথ, কাজল বরণ নাথ, ইফতেখার আরিফ, ড. ফাওজীয়া ফালেহা সাদিদা, নাসিমা পারভীন, প্রভাষক মার্জিয়া খাতুন স্মিতা, সুস্মিতা দত্ত ও জেরিন আক্তার উৎসবে অংশ নেন।

শুরুতেই শিক্ষকরা বাঙালির ঐতিহ্য রিকশায় চড়ে উৎসবে আসেন। এরপর ফাল্গুনী গান, ক্লাসিকাল ও উপজাতীয় নাচ, কবিতা আবৃত্তি, নজরুলগীতি, রবীন্দ্র সংগীত, মূকাভিনয়সহ বিভিন্ন আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

উৎসবে ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা অংশ নেন বালিশ খেলায়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের তোলা অসংখ্য চিত্রে প্রদর্শিত হয় প্রদর্শনী। উৎসবে আগতদের জন্য আয়োজন করা কয় মার্বেল খেলা।

এ ছাড়া উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাহারি স্বাদের পিঠার স্টল। 'আলপলনি, উৎসবের রঙ্গে-পিঠার সঙ্গে, তৃনিশ, পিঠার খোঁজে নবোত্তমে' নামে স্টলগুলোর নামকরণ করা হয়।  

স্টলগুলোতে ছিল শতাধিক রকমের পিঠা। এরমধ্যে ডিমসুন্দরী, চিকেন পুরি, পোয়া, সুজি রসবড়া, ব্যাঙ পিঠা, পাটিসাপটা, মুগপাকন, খেজুর গুড়ের পাটিসাপটা, কাবাব, নারিকেলের নাড়ু, মাংসপুলি, কাঁঠাল খিলি পিঠা, শাহি মালাই, ফুলঝুরি, ডালপাকন, পাকুড়া, চকলেট পুডিংসহ বিভিন্ন পিঠায় সাজানো হয় স্টলগুলো।  

বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া মুবাশশিরা বলেন, আমাদের স্টলে ২৫ আইটেমের পিঠার আয়োজন করেছি। উৎসবের শুরুতেই অর্ধেক পিঠা বিক্রি হয়ে যায়। পিঠা বিক্রির পাশাপাশি আমরা উদযাপনও করছি।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জাফর আহসান বলেন, খুব বেশি উপভোগ করছি। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের বসন্ত বরণ উৎসব আয়োজনের দিক থেকে সবসময়ই একটু ব্যতিক্রম। অনেক ধরনের পিঠা খেয়েছি। পাশাপাশি পিঠা ও উৎসবের ছবি তুলে উপভোগ করছি।

শিক্ষার্থী রাইমা তাবাসসুম বলেন, সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো খুবই চমৎকার লাগছে। বিশেষ করে উপজাতীয় নাচগুলো উপভোগ করেছি। আইইআরের শিক্ষার্থীদের আতিথেয়তাও ভালো লাগার মতো। মনে হচ্ছে নিজের বিভাগের অনুষ্ঠানেই অংশ নিয়েছি।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. গোলাম মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন আয়োজন আমাদের আনন্দিত করে। আমরা সাংস্কৃতিক জাতি। সংস্কৃতি আমাদের প্রাণ। এখানে এসে আমি আমার ছেলেবেলায় ফিরে গেছি। তাদের প্রাণবন্ত আয়োজন সফল হোক। এমন সৃজনশীল কাজের সঙ্গে আমরা সবসময় আছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।