চট্টগ্রাম: বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, তেলের দাম বাড়ার পর বাম দল আমার পদত্যাগ দাবি করেছিল। বাণিজ্যমন্ত্রীর পদের প্রতি আমার লোভ নেই।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম চেম্বারের মাসব্যাপী সিআইটিএফের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সাল বেশি দূরে নয়, বাংলাদেশের অবস্থান বদলে গেছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সঙ্গে বহুকালের যোগাযোগ। এ মাটি অনেক বীর, আউলিয়ার দেহ রেখেছে। সাগরের মতো বিশাল মন চট্টগ্রামের মানুষের। ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী। চট্টগ্রাম অর্থনীতির লাইফ লাইন, গেটওয়ে। চট্টগ্রামের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। সেই চট্টগ্রামকে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বন্দরকে আপগ্রেড করতে হবে। আশাকরি ৬০ বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে পারব এবার। মহাসড়কে ১৩ টনের বাধা পণ্যের ওপর পড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম এলে পাহাড়ের মাঝে শহর দেখতাম। সমুদ্রের হাতছানি দিত। একসময় চট্টগ্রাম পর্যটন নগরী ছিল। ঢাকা থেকে ট্রেন কক্সবাজার পর্যন্ত যাবে। ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে সেই চট্টগ্রাম চাই।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
এমএ লতিফ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের অবকাঠামো উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছেন। কানেকটিভিটি হচ্ছে দেশের উন্নতি। সরকার স্থিতিশীল বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে। দেশে এখন কাজের লোক পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, কতিপয় কুলাঙ্গার ব্যবসায়ীর জন্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।
সিএমপি কমিশনার বলেন, কোভিডের কারণে অনেক দেশের জিডিপি কমেছে, বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। আগামীর বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় বড় চালিকা শক্তি হচ্ছে চট্টগ্রাম। মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর, এনার্জি হাব, মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে। দুই বছর পর চট্টগ্রামে বাণিজ্য মেলা হচ্ছে। চট্টগ্রামকে বিনিয়োগবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব করতে সিএমপির প্রতিটি সদস্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এ মেলার উদ্দেশ্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা। দুঃখের বিষয় চট্টগ্রামে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী জায়গা চাই।
তিনি বলেন, ১০০ বিলিয়ন রফতানির লক্ষ্য পূরণে বে টার্মিনালের বিকল্প নেই। ফার্স্ট ট্রেকে নিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে এ টার্মিনালের কাজ শেষ করতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত করা সময়ের দাবি। বিএসটিআই, কোয়ারেন্টাইনসহ সরকারি দফতরের যে অফিস চট্টগ্রামে আছে তাদের ক্ষমতা দিতে হবে। মহাসড়কে ১৩ টনের বিধিনিষেধ দেশের সব মহাসড়কের জন্য আরোপ করতে হবে। নয়তো ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেলের কার্যক্রম শিথিল করতে হবে।
সিআইটিএফ চেয়ারম্যান, চেম্বার পরিচালক একেএম আকতার হোসেন বাণিজ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি রফতানি হয় চট্টগ্রাম দিয়ে। দেশে খাদ্য ও তেল আমদানিতে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। পণ্য খালাসে বাধা কোথায়, শুল্ক কত, মূল্য কত খতিয়ে দেখতে হবে। কেন চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করা হচ্ছে? কেন চট্টগ্রাম থেকে পণ্যবাহী গাড়ি ভাড়া বেশি নেওয়া হবে।
তিনি জানান, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এবার সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এবার সিআইটিএফে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ লাখ ফ্রি টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ধন্যবাদ বক্তব্য দেন চেম্বারের সহ সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন নাসরিন ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
এআর/টিসি