ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বর্ণ দিয়েই শুরু হবে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
স্বর্ণ দিয়েই শুরু হবে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম বাজুস চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: স্বর্ণ দিয়েই দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম শুরু হবে; এই প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কারিগরি সহযোগিতা চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমোডিটি এক্সচেঞ্জের এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন, এমনটি আশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের।

 

সোমবার (২১ নভেম্বর) বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের একমাত্র পাঁচতারা হোটেলে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুস সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, আল্লাহ সবকিছু ঠিক রাখলে আগামী মার্চে দেশের প্রথম বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারির উৎপাদন শুরু হবে।

সরকার সব সুবিধা দিতে প্রস্তুত যদি দেশে স্বর্ণের উৎপাদন হয়। জুয়েলারি শিল্পের বড় কিছু অর্জনের জন্য দেশের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ শেয়ার বসুন্ধরা গ্রুপের এবিজি লিমিটেড কিনেছে। এটি ঐতিহাসিক মাইলস্টোন। বসুন্ধরা গ্রুপ পুঁজিবাজারে আসায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।  
তথ্যপ্রযুক্তি উৎকর্ষের অন্যতম উদাহরণ হবে এই পুঁজিবাজার। দেশের মানুষ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার বিচক্ষণতা, দূরদির্শতা আমাদের এই উন্নতির পথে নিয়ে এসেছে।  

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ লেনদেন প্রথম শুরু হবে স্বর্ণ দিয়ে। আর এ কারণেই বাজুসের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এজন্য বাজুসকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা পরিকল্পনা করেছি ঐতিহাসিক এই যাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে উদ্বোধন করতে।  

সৈনিক হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বর্ণ খনিতে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, বাইরে থেকে অপরিশোধিত স্বর্ণ এনে পরিশোধন হবে বাংলাদেশে। আর সেই পরিশোধন থেকে পাওয়া বাইপ্রডাক্ট দিয়ে নতুন নতুন শিল্প গড়ে উঠবে। এটা বসুন্ধরা গ্রুপের অসম্ভব সাহসী উদ্যোগ। ইতিহাস একদিনে রচিত হয় না। নিশ্চয়ই এই উদ্যোগের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের নামও ইতিহাসে লেখা থাকবে।

ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পরিচালক ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বাংলাদেশ সম্ভাবনার দেশ। জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। যেভাবে স্বর্ণালঙ্কার তৈরি করেন, সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলবেন। পদ্মাসেতু আমাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। আপনাদের প্রত্যেকের উচিত সোনার বাংলা, সোনার মানুষ গড়ে তোলা।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী বলেন, বাজুস নির্বাচনে আপিল বোর্ডে দায়িত্ব পালনকালে দেখেছি সদস্যদের সমষ্টিগত অবস্থান ছিল না। এখন বাংলাদেশে গোল্ড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি হবে। বাংলাদেশ থেকে স্বর্ণ রপ্তানি হবে শুনতেই ভালো লাগছে। আমি মনে করি এই জুয়েলারি শিল্প সফল হবে। আগামী ৫-১০ বছরেই দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকে ছাড়িয়ে যাবে স্বর্ণ রপ্তানি।

বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের হাত ধরে স্বর্ণশিল্পের হারানো গৌরব ফিরে আসবে। ঢাকায় চার-পাঁচটি স্বর্ণালংকার কারখানা চালুর পথে রয়েছে। এ শিল্পকে বাঁচাতে হলে সবাইকে বাজুসের পতাকাতলে আসতে হবে। চট্টগ্রামে অনেক সংকট ছিল বাজুসের। আমরা সংকট কাটাতে পেরেছি। আনন্দের বিষয় ৬৪ জেলায় নতুন কমিটি করেছি। বাজুসের ৬-৭ হাজার সদস্য ছিল, এখন বেড়ে ৪০ হাজার হয়েছে।  স্বর্ণশিল্প পরাধীন থাকবে না। মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা স্বর্ণ রফতানি হবে।

বাজুস সহ সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, বাজুসের একটি বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা পাঁচতারকা হোটেলে হওয়াটা গর্বের বিষয়। বাজুস সভাপতির শৃঙ্খলা আমরা মেনে চললে সফল হব। বছরের শুরুতে বাজুস মেলা করেছেন সভাপতি। সুন্দর মেলা হয়েছে। সভাপতি বলেছেন প্রতিবছর মেলা হবে।  

বাজুস সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, জুয়েলারি শিল্প প্রাচীন। হাতে তৈরি প্রডাক্টের দাম বেশি। জুয়েলারি শিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে। আমরা রপ্তানি করব। কালোবাজারির অপবাদ চিরতরে ঘুচিয়ে দিতে চান বাজুস সভাপতি।

অনুষ্ঠানে জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দের প্রশ্নের জবাব দেন বাজুস সহ-সভাপতি ডা. আমিনুল ইসলাম শাহীন ও বাজুস সহ সভাপতি বাদল চন্দ্র রায়।
ধন্যবাদ বক্তব্য দেন বাজুস চট্টগ্রাম সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার সাহা। সমাপনী বক্তব্য দেন বাজুস চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি মৃণাল কান্তি ধর। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নোয়াখালীর বাজুস সভাপতি আবুল হোসেন, রাঙামাটির বাজুস সভাপতি মৃদুল দত্ত, লক্ষ্মীপুর সভাপতি হরিহর পাল প্রমুখ।

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো প্রতিনিধি সভায় আসায় অনুষ্ঠানে বাজুস সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।