আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম জেলার হাঁপানিয়া এলাকায় সত্তরের দশকে চালু হয় জুট মিল। তখন রাজ্যে বিপুল পরিমাণ পাটের চাহিদা দেখা দেয়।
তখন থেকে রাজ্যে প্রচুর পরিমাণ পাট উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু রাজ্যের উৎপাদিত পাট মিলের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। তাই বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হতো পাট।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে ও পরিচালনার ত্রুটির জন্য ত্রিপুরা রাজ্যে শিল্পের ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ জুটমিলের আজ জরাজীর্ণ অবস্থা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রাজ্যের একমাত্র জুট মিলটি, যা বন্ধ হওয়ার প্রহর গুনছে।
১৯৮০ সালে যখন ত্রিপুরা রাজ্যে পাট চাষের রমরমা চলছিল তখন পাট চাষ শুরু করেন সিপাহীজলা জেলার নলছড় এলাকার বাসিন্দা উপজাতি অংশের চাষি বিশ্ব মনি মুড়াসিং। তখন প্রতি মণ পাট বিক্রি হতো ২শ’ থেকে ৩শ’ রুপিতে। আর এখন প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় এক হাজার ২শ’ রুপিতে। তারপরও ত্রিপুরা রাজ্যে এখন আর আগের মতো পাট চাষ হচ্ছে না বলে বাংলানিউজকে বলেন বিশ্ব মনি মুড়াসিং।
কারণ হিসেবে বাজারে পাটের চাহিদা কমে যাওয়াকে উল্লেখ করেন তিনি। তবুও প্রতি বছর পাট চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি মাত্র এককানি জমিতে পাট চাষ করেছেন। এখন পাট তোলার কাজ চলছে।
পাট জাগ দেওয়ার পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে বিশ্ব মনি মুড়াসিং আরও জানান, এ বছর তার জমি থেকে প্রায় ৮ মণ পাট পাওয়া যাবে। চাষের খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণে ৫শ’ রুপি করে লাভ হবে বলেও জানান তিনি।
সিপাহীজলা জেলার কৃষি দফতরের মোহনভোগ সাব ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ড অভিমুন্য নাগ বাংলানিউজকে জানান, এলাকায় এ বছর মোট ২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এছাড়াও বক্সনগর, আড়ালিয়া, সোনামুড়া, কলমক্ষেত, বানীছড়া এসব জায়গায় পাট চাষ হয়।
তারপরও দিনদিন পাট চাষ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন- বাজার কমে যাওয়ার জন্যই চাষিরা পাট চাষে উৎসাহ হারাচ্ছেন। প্রতিযোগিতার বাজারে পাটকে পেছনে ফেলে পলিথিন দিনদিন এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য দেশব্যাপী নীতি নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকেও পাটজাত পণ্য ব্যবহারের প্রতি সচেতন হবে বলেও মত দেন অভিমুন্য নাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৬
এসএন/ জেডএস