ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার বাজারে ‘পূজা’র ভিড়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৬
কলকাতার বাজারে ‘পূজা’র ভিড় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: দিন গোনা প্রায় শেষ। কলকাতার মণ্ডপে মণ্ডপে পৌঁছে যাচ্ছে দুর্গা প্রতিমা।

শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিতে ব্যস্ত শিল্পীরা। মণ্ডপের ভেতর থেকে আসছে হাতুড়ির ঠুক ঠাক শব্দ। আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ আর মফস্বলের রেললাইনের ধারের কাশফুল জানান দিচ্ছে পূজা এসে গেছে।

কলকাতার বনেদি বাড়ির পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির টান। ইতিমধ্যেই আত্মীয়-স্বজনরা আসতে শুরু করেছেন। বনেদি বাড়ির আটচালায় চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ।

সেই সঙ্গে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ব্যস্ততাও বেড়েছে কয়েকগুণ। কলকাতার পূজার বাজারের জন্য বিখ্যাত দক্ষিণের গড়িয়াহাট, খিদিরপুর, বেহালা আর উত্তরের হাতিবাগান, বাগবাজার, কলেজ স্ট্রিট এলাকায় প্রতিদিনই প্রচুর পরিমাণে মানুষ জড়ো হচ্ছেন পূজার কেনাকাটার জন্য। এছাড়াও প্রতি বছরের মতোই নিউমার্কেট ও বড় বাজার এলাকায় ভিড় রয়েছে।

কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ জড়ো হচ্ছেন বাজারগুলোতে। শুধু কলকাতা নয় আশেপাশের অঞ্চল ও জেলা থেকে মানুষজন কেনাকাটার জন্য আসছেন। ভিড় হচ্ছে কলকাতার শপিং মলগুলোতেও।

কলকাতার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ভিড় শাড়ির দোকানগুলোতে। গড়িয়াহাট অঞ্চলের বিখ্যাত কয়েকটি শাড়ির দোকান ছাড়াও অন্যান্য শাড়ির দোকানে বিগত কয়েকদিন ধরেই লম্বা লাইন পড়েছে। উত্তর কলকাতার বাজারগুলোতেও চোখে পড়ার মতো ভিড় জমেছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁত, ঢাকাই, দক্ষিণ ভারতের সুতির শাড়ি, সিল্ক শাড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পাল্লা দিয়ে বুটিকের শাড়ির চাহিদা এ বছরে যথেষ্ট বেড়েছে।

শাড়ির পরই ছোটদের পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় রয়েছে। মেয়েদের পোশাকে চুড়িদারের চাহিদা প্রতি বছরের মতোই সবচেয়ে বেশি।   সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাম্প স্যুট, ম্যাক্সি ড্রেস এবং পাকিস্তানি চুড়িদার।

কলকাতা নিউমার্কেট এলাকায় বাজারে আসা ক্রেতা অনিতা মুখার্জি বাংলানিউজকে বলেন, পূজার বাজারে কেনাকাটা করার মজাই আলাদা। পরিবারের সঙ্গে কেনাকাটা করা বছরের অন্য সময়গুলোতে হয়ে ওঠে না।  

হাওড়া জেলা থেকে আসা দীপক সাহা বলেন, পূজার কেনাকাটা শুধুমাত্র পূজার জন্য করা হয় এমনটা নয়। সারা বছরে প্রয়োজনীয় পোশাক পরিচ্ছদের বড় অংশ এ সময়েই কেনা হয়ে যায়।

ত্রিপুরা থেকে আসা প্রতুল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, পূজার বাজারের একটা অংশ জুড়ে থাকে উপহারের জন্য কেনা। তাই পূজার বাজার করার সময় যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করে, সবার পছন্দ মাথায় রেখে কেনাকাটা করতে হয়।

কলকাতার শপিং মলগুলিতেও যথেষ্ট ভিড় রয়েছে। পূজা উপলক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে।   কেউ কেউ ‘সারপ্রাইজ ডিসকাউন্ট’ ঘোষণা করে শপিং মলে আসা ক্রেতাদের অবাক করে দিচ্ছেন।

বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছরের মতোই কেনাবেচার পরিমাণ ভালোই।

অনলাইনে পণ্য কেনার প্রবণতা দোকানগুলোর কেনাকাটায় প্রভাব ফেলেছে কিনা জানতে চাইলে বিক্রেতার বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের অনুরোধে বেশি রাত পর্যন্ত দোকান খুলে রাখতে হচ্ছে। যদিও ভারতের অনলাইন কেনাকাটার ওয়েবসাইটগুলো উৎসবের আগে ব্যবসার পরিমাণ ৬শ’ কোটি রুপি হতে পারে বলে ভারতের বেসরকারি একটি সংস্থা তাদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

তবে সব মিলিয়ে বলা যায়, পূজার কেনাকাটা উৎসব শুরুর আগে থেকেই কলকাতাকে উৎসবমুখর করে তুলেছে। সামনের দিনেগুলোতেও এ কেনাকাটা নিয়ে উৎসাহ বজায় থাকবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৬
ভিএস/জিপি/ডেজএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।