ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হচ্ছেন মোদী ও মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৭
 হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হচ্ছেন মোদী ও মমতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কলকাতা: শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করেই অনেক দিন বাদে মুখোমুখি হচ্ছেন ভারতের প্রধান দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

 

দুই মেরুর  দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখোমুখি বসার ক্ষেত্রে অনেকটা অনুঘটকের কাজ করেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর।

ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন রাইসিনা হিলস এ নৈশভোজের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

অপরদিকে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে রয়েছে শেখ হাসিনার সম্মানে মোদীর মধ্যাহ্ন ভোজনের আয়োজন।

 

দুই স্থানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে। জানা গেছে প্রোটোকল মেনে দুই জায়গাতেই থাকবেন মমতা।

 

মনে করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের মাঝখানেই মমতার সঙ্গে মুখোমুখি বসে নিতে চান মোদী। তিস্তা নিয়ে আলাদা করে তার বক্তব্য জানতে চাইবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

 

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারও তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় মমতার দ্বিমত।

এক্ষেত্রে আরও বেশ কয়েকটি বিষয় আছে। গোটা উপমহাদেশসহ প্রতিবেশী দেশে কোনো জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ানো হোক সেটা ভারতের কাছে মোটেই কাম্য নয়। এই ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেই সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তি একটি বড় ধাপ সেটা খুব ভালোভাবে জানেন ভারতের কূটনীতিকরা।

 

শেষ মুহূর্তে মমতার দিল্লিতে যাওয়া একটা সমাধান সূত্রের সম্ভাবনা তৈরি করবে বলেই আশা করছে বিভিন্ন মহল। গত দুই দিন আগেও মমতার দিল্লি যাওয়ার বিষয়টা এতোটা সহজ ছিল না। সেই সময় জানা যাচ্ছিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ হাসিনার সফরের সময় সম্ভবত দিল্লি উপস্থিত থাকবেন না। রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ রক্ষা করতে তিনি পাঠাবেন দলের কোনো সাংসদকে।

 

সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, এর পরেই সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। অবশেষে সুষমার অনুরোধেই মমতা দিল্লি যেতে রাজি হন। তবে মমতার দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি মোটেও একমাত্রিক নয়। এর মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কয়েকটি বিষয় জড়িয়ে আছে বলেই মত ভারতের কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের।

 

তাদের মতে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি দাবি মোদীর কাছে রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও মোদীর সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসতে পারে কিছু রাজনৈতিক বিষয়ও। সেই বিষয়গুলির সমাধানের ওপর আলোচনার পরিস্থিতি অনেকটা নির্ভর করবে। অবশ্যই মমতার সঙ্গে মোদীর বৈঠকের ওপর নির্ভর করবে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে মমতার অবস্থান।

 

সন্ত্রাসবাদ ভারতের একটি বড় সমস্যা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদকে কড়াভাবে  দমন করছে। উপমহাদেশে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে ভারত এবং বাংলাদেশের দুপক্ষেরই সহযোগিতা দরকার। এছাড়াও আছে রেল যোগাযোগ, বাস পরিষেবা, বর্ডার হাট এবং গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পের মতো বিষয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কোনো না কোনো ভাবে যুক্ত আছে পশ্চিমবঙ্গ। ফলে মোদী ও মমতার মধ্যে এই আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

ভারতের কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন আলোচনার মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে সমাধান। তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে শেখ হাসিনা, মোদী ও মমতাকে এক ফ্রেমে দেখতে পাওয়া অবশ্যই ইতিবাচক ব্যাপার। আর সেটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করে।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭

ভিএস/এএটি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।