সবাইকে চমকে দিয়ে সেই তাজমহল নিজেদের বলে অধিকার দাবি করেছিল উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।
চলতি বছরের ১১ এপ্রিল এই মামলায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের রায় খারিজ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ‘২৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্ষমতায় ছিল।
এরপর তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের মামলা নিয়ে ১০ জুলাই (মঙ্গলবার) মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জানতে চায়, তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সরকারের এত ‘গা-ছাড়া মনোভাব’ কেন?
এদিন কড়া ভর্ৎসনায় ভারতের শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, এই ঐতিহাসিক সৌধকে রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি ‘নিরাশাজনক’ হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
তাজমহলকে রক্ষা করা ও তার রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তার একটি চূড়ান্ত খসড়া পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকারকে।
কিন্তু তা পেশ করতে ব্যর্থ হয় রাজ্য সরকার। সে কারণে শীর্ষ আদালত ক্ষুব্ধ। সুপ্রিম কোর্টের তোপ, হয় তাজমহলের প্রাচীন সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনুন, তা যদি না পারেন ইচ্ছা হলে সেটি ভেঙে ফেলুন।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতির কারণে তাজমহলকে রক্ষা করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং কী করা দরকার, তার বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্র সরকারকে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি এম বি লকুর ও দীপক গুপ্তের বেঞ্চ।
কোর্ট বলেন, তাজমহলকে রক্ষা করার স্বার্থে স্থায়ী কমিটির পেশ করা রিপোর্ট সত্ত্বেও দুই সরকার পাকাপোক্ত কোনো পদক্ষেপই নেয়নি কেন?
ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাজমহল ও তার আশপাশে বায়ু দূষণের মাত্রা ঠিক কতটা, তা মাপার কাজ চালাচ্ছে কানপুর আইআইটি। চার মাসের মধ্যে সেই রিপোর্ট পেশ করা হবে।
ঐতিহাসিক এই সৌধ ও তার আশপাশে দূষণের উৎসগুলো কী, তা জানার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গড়া হয়েছে। ওই কমিটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সরকারকে সুপারিশ করবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টকে আরো জানানো হয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারকে যে অ্যাকশন প্ল্যান বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেটি তৈরির কাজ এখনো শেষ হয়নি।
একথা শুনে আরো কড়া ভাষায় সরকারকে তোপ দাগে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। সুর চড়িয়ে বলেন, তাজমহল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর কি সেই অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হবে? হয় তাজমহলকে রক্ষা করতে হবে। না হলে সেটি ভেঙে ফেলা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভারত সরকারকে।
এরপর শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৩১ জুলাই থেকে এই ইস্যুতে শুনানি চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
ভিএস/এমএ