ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অনলাইনে আসছে অখণ্ড বাংলার পাণ্ডুলিপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৮
অনলাইনে আসছে অখণ্ড বাংলার পাণ্ডুলিপি

কলকাতা: বিশ্বভারতীর সমর্থন ও উদ্যোগে একসময়ের অবিভক্ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি অনলাইনে প্রকাশের (ডিজিটালাইজড) উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বিশ্বগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ ঠাকুর পরিবারের সম্পত্তির নথি, জমিদারির নানা হিসেবের পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ করে ডিজিটালাইজডের মাধ্যমে জনসমক্ষে আনা হচ্ছে।

এতে অনেক অজানা তথ্যর উন্মোচন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

বিশ্বভারতীর সংগ্রহে থাকা ৮ লাখ পৃষ্ঠার লেখা পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে ডিজিটালাইজড ম্যানুস্ক্রিপ্ট কনজার্ভেশন সেন্টার।

 

বিশ্বভারতী ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা মূল্যবান পুঁথি ও পাণ্ডুলিপিও এতে একত্রিত করা হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ করার জন্য যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে।  

বিশেষজ্ঞদের বলছেন, পুরো বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে বাংলা সাহিত্যের একটি নতুন দিক উন্মোচন হবে। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবন ও লিপিকায় তালপাতা, তুলোট কাগজ, পেরেট পাতায় লেখা বহু প্রাচীন পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি রয়েছে।  

এছাড়া রবীন্দ্র ভবনেই ঠাকুর পরিবারের ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তির দলিল, হিসেব-নিকেশের পাণ্ডুলিপিও রয়েছে। যা অনেকের-ই অজানা। সেইসব পুঁথি ও পাণ্ডুলিপি ডিজিটালাইজড সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন।  

এরপরই এ নিয়ে পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্টস। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে বহু প্রাচীন পুঁথি নষ্ট হওয়ার হাত থেকে নতুন প্রাণ পাবে।  

পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার খড়দহের একটি প্রাচীন গ্রন্থাগারে ৮০টি পুঁথি সংরক্ষিত আছে। সেসব পুঁথিগুলোও একত্রিত করা হচ্ছে।  রবীন্দ্র গবেষকসহ পুঁথি গবেষকরা এই বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এর আগেও এনিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা মাঝপথে থমকে যায়। এক্ষেত্রে যেন তা না হয়। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলা সাহিত্য আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে এবং সুরক্ষিত থাকবে।  

উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশ্বজুড়ে সুনাম রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে বহু কবি-সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যে অমূল্য সম্পদ সৃষ্টি করে গেছেন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে অনেক পুঁথি নষ্ট হয়ে গেছে।  

আর এ বিষয়টি অনেক আগে উপলব্ধি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনিই প্রথম বিশ্বভারতীতে পুঁথিশালা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেও বহু পুঁথি সংগ্রহ করা শুরু করেছিলেন।  

এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এনেছিলেন তুলোট কাগজে লেখা ‘জুগির গান’ পুঁথি। এছাড়া ক্ষিতিমোহন সেন বেনারস (কাশী) থেকে অনেক পুঁথি নিয়ে আসেন বিশ্বভারতীতে।  

পরবর্তীকালে পঞ্চানন মণ্ডল, পশুপতি শাসমল, সুখময় মুখোপাধ্যায় সেই কাজ আরো এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ তাদের চেষ্টায় বহু প্রচীন পুঁথি ও পাণ্ডুলিপির সম্ভার গড়ে ওঠে বিশ্বভারতীতেও।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৮
ভিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।