কলকাতা: গত এপ্রিল-মে রাজ্যে যেখানে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২১-২২ হাজার। সেখানে গড়ে ৬০০ শনাক্ত হচ্ছে।
বুধবার (১ সেপ্টম্বর) প্রশাসন ভবন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একাধিকবার এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
এমনকি এ বিষয় নিয়ে সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে উপ-নির্বাচন চেয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সম্ভবত সেই দৌড়ঝাঁপের সুফল মিলতে চলেছে। সঠিক দিনক্ষণ প্রকাশ না হলেও নবান্নের তরফে জানা যায়, সব ঠিক থাকলে অক্টোবরে দুর্গা পুজার আগেই রাজ্যে উপ-নির্বাচন হতে পারে। এমনই রাজ্যের মুখ্য সচিবকে ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।
এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদির বৈঠক করেছেন উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন এবং উমেশ সিনহা। সেই বৈঠকে জানতে চাওয়া হয়েছে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি কেমন? পূজোর ছুটি কবে? রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, ১০-২৪ অক্টোবর অব্দী পুজার সময় এবং করোনা কম। সব শুনে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘তৈরি থাকুন যে কোনোদিন উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের শাসন ক্ষমতা পেলেও দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছিলেন। তার এই মুখ্যমন্ত্রী পদ টিকিয়ে রাখতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কোনো একটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে জিততে হবে। অর্থাৎ সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৪ নভেম্বর। ফলে মমতার দল চাইছে যত দ্রুত সম্ভব উপ-নির্বাচন হয়ে যাক।
এছাড়া একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের বদলে রাজ্যে নির্বাচন হয়েছিল ২৯২টি আসনে। ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জে দুই বাম প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় নির্বাচন হয়নি। এছাড়া
আরও ৫টি কেন্দ্র-কোচবিহার জেলার দিনহাটা, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ, নদীয়া শান্তিপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা গোসাবায় ভোট হলেও একাধিক কারণে উপ-নির্বাচন হবে। ফলে এই ৭ কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত তৃণমূল কংগ্রেস।
তবে রাজ্যে উপ-নির্বাচনের বিরোধীতা করেছে বিজেপি। তাদের কথা, মমতার সরকার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা বুঝিয়ে দিচ্ছে এখনই উপ-নির্বাচন হতে পারে না। কারণ কলকাতা করপোরেশনের ভোটের মেয়াদ শেষ, তাও ভোট হচ্ছে না। চার বছর ধরে কলেজের ছাত্র সংসদের ভোট হচ্ছে না। স্কুল-কলেজ, লোকাল ট্রেন বন্ধ। রাজ্যে করোনার কারণে কড়া বিধিনিষেধ থাকায় ব্যবসা বাণিজ্যও স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না। রাজ্যবাসীর উপার্জন কমেছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের উপ-নির্বাচনের জন্য এত তাড়া কীসের? এখনই নির্বাচন হওয়ার পরিবেশই নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টম্বর ০২, ২০২১
ভিএস/আর্