কলকাতা: সবেমাত্র সূর্য অস্তাচলে, ডানে-বাঁয়ে যেদিকেই চোখ যায় বরফের চাদরে ঢাকা পর্বতমালা, সঙ্গে হিমেল বাতাস। পাশের মানুষটির উষ্ণ ছোঁয়া আর লেকের পানিতে দোল খাওয়া শিকারা।
স্বপ্ন নয়, সেটা বাস্তবেই করে দেখালো ভূস্বর্গ কাশ্মীর। বলা যায়, কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে নতুন পালক।
শ্রীনগরের ডাল লেকে চালু হলো ভাসমান মুক্তমঞ্চ। এই মঞ্চ আদতে আস্ত একটি সিনেমা হল। যা শিকারায় বসে রূপালি পর্দায় চোখ রেখে আনন্দ উপভোগ করা যাবে। সঙ্গে লেজার শোয়ে আলোর খেলা।
ভারতে দীপাবলির আগে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) স্থানীয় নৃত্যশিল্পীদের নাচের অনুষ্ঠান দিয়ে এই মঞ্চ পথচলা শুরু করল। অনুষ্ঠানের পর ওদিন সেখানে শক্তি সামন্তের ছবি ‘কাশ্মীর কি কলি’প্রর্দশন করা হয়। যা পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে কাশ্মীরের প্রশাসন। এশিয়ার মধ্যে এ ধরনের ভাসমান সিনেমা মঞ্চ এই প্রথম।
কাশ্মীর পর্যটন বিভাগের ডিরেক্টর জিএন এটো জানিয়েছেন, ডাল লেকের একেবারে মাঝখানে মুক্তমঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে লাগানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন। সঙ্গে ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড। প্রতিদিন দেখানো হবে দেশ-বিদেশের সিনেমা। শিকারায় বসে তা দেখতে পারবেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। এখানে করা যাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্ক্রিনের মাধ্যমে সেসব উপভোগ করবেন দর্শকরা।
জাম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যসচিব অরুণ কুমার মেহতা জানিয়েছেন, কাশ্মীরে প্রথম থেকেই ডাল লেক পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এবার তাদের এই ভ্রমণকে আরও বেশি আনন্দদায়ক করে তুলতে ভাসমান মঞ্চের এই উদ্যোগ। কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পের বিকাশে এই মুক্তমুঞ্চ সহায়ক ভূমিকা নেবে।
শুধু পর্যটকদের কাছে নয়, ডাল লেকের ভাসমান মুক্তমঞ্চ স্থানীয়দের মধ্যেও উন্মাদনা তৈরি করেছে। এমনিতে সন্ত্রাসবাদের চোখরাঙানিতে শ্রীনগরজুড়ে প্রেক্ষাগৃহের দরজা এক প্রকার বন্ধ। স্বাভাবিক নয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। ফলে বিনোদনের যাবতীয় রসদ অনেকদিন আগেই হারিয়ে ফেলেছিলেন কাশ্মীরিরা।
ডাল লেকের মুক্তমঞ্চ চালু হতে এবার থেকে পর্যটকদের সঙ্গে আনন্দ ও বিনোদনের স্বাদ ভাগভাগি করে নিতে পারবেন তারাও। তাই কয়েক দিন ধরে কাশ্মীরিদের ভিড় জমছে ডাল লেকের সামনে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, ৩ নভেম্বর ২০২১
ভিএস/জেএইচটি