সদ্য শেষ হওয়া কলকাতা পৌরসভার নির্বাচনে জয়ী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে দলটি।
এবার পৌর নির্বাচনে জয়ী হয়েছে ২১ জন মুসলিম কাউন্সিলর প্রার্থী। এরমধ্যে তৃণমূলের প্রার্থী রয়েছেন ১৮ জন। বাকিদের মধ্যে দুজন স্বতন্ত্র ও একজন কংগ্রেস প্রার্থী।
তৃণমূলের জয়ী মুসলিম প্রার্থীরা হলেন- কলকাতার বিদায়ী মেয়র ও রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (৮২ নম্বর ওয়ার্ড), ইকবাল আহমেদ (২৯ নম্বর ওয়ার্ড), মো. জসিম উদ্দিন (৩৯ নম্বর ওয়ার্ড), রেহানা খাতুন (৪৪ নম্বর ওয়ার্ড), আমিরুদ্দিন (৫৪ নম্বর ওয়ার্ড), কাইসার জামিল (৬০ নম্বর ওয়ার্ড), মানজার ইকবাল (৬১ নম্বর ওয়ার্ড), সানা আহমেদ (৬২ নম্বর ওয়ার্ড), সাম্মি জাহান বেগম (৬৪ নম্বর ওয়ার্ড), ফৈয়াজ আহমেদ খান (৬৬ নম্বর ওয়ার্ড), নিজামুদ্দিন সামস (৭৫ নম্বর ওয়ার্ড), সামিমা রেহান খান (৭৭ নম্বর ওয়ার্ড), মো. আনোয়ার খান (৮০ নম্বর ওয়ার্ড), শামস ইকবাল (১৩৪ নম্বর ওয়ার্ড), শামসুজ্জামান আনসারি (১৩৬ নম্বর ওয়ার্ড), ফরিদা পারভীন (১৩৮ নম্বর ওয়ার্ড), শেখ মুস্তাক আহমেদ (১৩৯ নম্বর ওয়ার্ড) ও আবু মো. তারিখ (১৪০ নম্বর ওয়ার্ড)।
এর মধ্যে কলকাতা পৌরসভার ইতিহাসে রেকর্ড জয়ের ব্যবধানে জিতে নজির গড়েছেন ফৈয়াজ আহমেদ খান। তিনি রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা ও অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খানের ছেলে। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফৈয়াজের জয়ের ব্যবধান ৬২ হাজারের বেশি। এর আগে ২০১৫ সালের পৌরভোটে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন ফৈয়াজ।
অন্যদিকে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে বিধানসভার নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিজেপির কাছে কলকাতা পৌরসভা নির্বাচন ছিল অনেকটা মর্যাদার লড়াই। আর সেই লক্ষ্যেই এবার নয় জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল তারা। যদিও তাদের কোনো প্রার্থী পৌর নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখতে পারেনি। কংগ্রেসও ৩০ জনের বেশি মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল। এরমধ্যে একমাত্র জয়ী প্রার্থী ওয়াসিম আনসারি (১৩৭ নম্বর ওয়ার্ড)।
স্বতন্ত্র দলের তিন জয়ী প্রার্থীর মধ্যে দুজনই মুসলিম। তারা হলেন- আয়েশা কানিজ (৪৩ নম্বর ওয়ার্ড), রুবিনা নাজ (১৩৫ নম্বর ওয়ার্ড)।
তবে ২০১৫ সালের কলকাতা পৌরসভার নির্বাচনের তুলনায় এবার মুসলিম কাউন্সিলরের সংখ্যা কমেছে। ওই বছর মুসলিম কাউন্সিলর ছিলেন ২৩ জন। এবার দুজন কমে হয়েছে ২১ জন। এরমধ্যে ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পরাজিত হয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর তথা কংগ্রেসের প্রার্থী মমতাজ বেগম। ওই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র দলের প্রার্থী পূর্বাশা নস্কর। অন্যদিকে ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর নিজামুদ্দিন শামসের পরিবর্তে ওই ওয়ার্ডে এবার সোমা দাসকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। ফলে দুজন মুসলিম কাউন্সিলর কমেছে।
প্রসঙ্গত, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তৃতীয়বারের মতো ‘ছোট লালবাড়ি’ বলে খ্যাত কলকাতা পৌরভবন দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রোববারই ১৪৪টি ওয়ার্ডের ভোট গণনা হয়। এরমধ্যে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়া বিজেপি তিনটি, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস দুটি করে এবং বাকি তিনটি ওয়ার্ডে জয়ী হয় স্বতন্ত্র দলের প্রার্থীরা।
আগামী বৃহস্পতিবার পৌরবোর্ড গঠন করা হবে। তারপরই শপথ নেবেন নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
এনএসআর