কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ (টেট) ইস্যুতে কলকাতায় ঘটে গেছে অত্যন্ত অবাক করা ঘটনা। একদল আন্দোলনকারী এ ইস্যুতে বিক্ষোভ শুরু করে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (২২ অক্টোবর) পথে নামেন বিদ্বজ্জনরা। প্রতিবাদ করেছেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, লেখিকা মন্দাক্রান্ত সেন, অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, সুরকার দেবজ্যোতি, কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতিসহ বহু বুদ্ধিজীবী।
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র এদিন মমতা সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা মেধাবী, চাকরির তালিকায় না উঠলেও অনশন করছিল। যারা অবরোধ করেছিল তারা বিশাল বড় অপরাধ করে ফেলেছে? কেন অধিকারের কথা বলছে? উনি পুলিশমন্ত্রী মমতা তো চান না। সে কারণেই তুলে দেওয়া হয়েছে। কোন জায়গায় এসে আমরা পৌঁছেছি সেটা ভাবুন একবার। আগামী দিনে যাতে এই মন্ত্রিসভা না থাকে সেটাই আমরা চাই।
অভিনেতা বাদশা মৈত্র বলেন, গোটা বাংলাজুড়ে যে দুর্নীতি চলছে সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। যারা অন্যায় করল, বিষয়টি জটিল করল, তারাই পুলিশ পাঠিয়ে যারা ন্যায্য চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের তুলে দিচ্ছে সড়ক থেকে। এটা তো হতে পারে না।
শিক্ষক নিয়োগকাণ্ডে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে অভিনেতা মন্তব্য, ধিক্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুলিশকে। এক শান্তিপূর্ণ, যোগ্য আন্দোলনের গায়ে এমন বীভৎস আঘাত করার জন্য। এই জঘন্য কাজের মাশুল গুনতে হবে রাষ্ট্রকে।
এদিনের মিছিল প্রসঙ্গে পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, এটা বুদ্ধিজীবীদের মিছিল নয়। এটা বামদের মিছিল। এদের গুরুত্ব নেই। এদের তো বিধানসভায় আসন নেই। বুদ্ধীজীবীতার নাম করে আসন আনতে পারবে না। সরকার যথাযথ প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছে। গুলি চালায়নি।
তবে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের অকথ্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র, সুদীপ্ত চক্রবর্তী, চিত্রপরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মত ব্যক্তিত্বরা। ওই ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে একটি ডেপুটেশনে সই করেছেন বেশ কিছু বুদ্ধিজীবী। এ তালিকায় আছেন ড. বিনায়ক সেন, অপর্ণা সেন, কুণাল সরকার, বিভাস চক্রবর্তী, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় রেশমী সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়। অনেকে আবার সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
ঘটনার প্রতিবাদে বুদ্ধিজীবীদের একাংশ ডেপুটেশনে লিখেছেন, আমরা দেখেছি অনশনরত চাকরি প্রার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য কীভাবে সল্টলেক বিধাননগর পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তাদের আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনাকে আমরা ধিক্কার জানাই এবং পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
ভিএস/এমজে