কলকাতা: দুর্গাপূজার আগে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের বসে না থেকে চা-বিস্কুট, ঘুগনি-ভাজাপোড়া বিক্রির পরামর্শ দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে চপ বিক্রেতাদের তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
রাজ্যের বেলপাহাড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম ফেরার পথে মাগুরার কাছে আন্ধেরিয়া গ্রামের একটি রাস্তায় গাড়িবহর থামিয়ে এক বিক্রেতার ঠেলায় চপ বানাতে শুরু করেন দিদি। সঠিক উপায়ে সেসব চপ ভেজে বিক্রিও করেন। হাজার রুপিতে বিক্রি হয় চপগুলো।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এন সহজাত আচরণ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান আন্ধেরিয়া গ্রামের চপ বিক্রেতাসহ স্থানীয়রা। নেতারাও কিছুটা আশ্চর্য হয়ে যান। মমতা চপ ভেজে কাগজের ঠোঙায় করে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করেন।
দুর্গাপূজার আগে বেকার যুবকদের উদ্দেশে বসে না থেকে ব্যবসার যে পরামর্শ তিনি দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার চপ বিক্রেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তার প্রমাণ দিলেন। কোনো কাজ ছোট নয়, বরং এ ব্যবসায় লাভ যে বড় আকারের হতে পারে- মূলত সেটি বোঝাতেই বিরোধীদের জবাব দেন মমতা।
মমতাকে কটাক্ষ করে বিরোধীদের অনেকে বলে থাকেন পশ্চিমবঙ্গে মমতার চপশিল্প থাকলে ভারতে আছে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির চা শিল্প। কিন্তু এসবের থোড়াই কেয়ার করেন মমতা? দেবী দুর্গার ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন- এক হাজার টাকা জোগাড় করে একটা কেটলি কিনুন আর মাটির ভার নিন; সঙ্গে কিছু বিস্কুট নিন। আস্তে আস্তে সে ব্যবসা বাড়বে। তার পরের সপ্তাহ মাকে বলবেন, একটু ঘুগনি (চটপটি) তৈরি করে দিতে। তার পরের সপ্তাহে একটু তেলেভাজা করলেন। একটা টুল আর একটা টেবিল নিয়ে বসলেন। সামনেই পূজা, এত বিক্রি হবে যে আপনি সামলাতে পারবেন না।
শুধু এসব কথাই নয়, কচুরিপানাকে শুকিয়ে থালা তৈরির পরামর্শও এক অনুষ্ঠানে দিয়েছিলেন দিদি। তুলার বিকল্প হিসেবে কাশফুল দিয়ে বালিশ তৈরি করার কথাও তিনি বলেছিলেন। তার মতে, ‘খেতে হবে খেটে। শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়। ’
সহজ ভাষায় মমতার এসব কথা বিরোধী দলের লোকজন পছন্দ করে না। তাদের মতে, রাজ্যে শিল্প হলে বাংলার বেকার যুবক-যুবতীদের এ ধরনের নিদান দিতে হয় না। কিন্তু মমতাও তাদের ধার ধারেন না। তার পক্ষের লোকজনের মত, মমতা যেভাবে বলেন, যুবক যুবতীরা সেভাবে শুনলে কখনই আয়-হীন থাকতে হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
ভিএস/এমজে