কলকাতা: আগামী বছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোট। প্রায় প্রতিদিন জেলা সফর করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঞ্চে উঠেই নিজের কিনে দেওয়া শীতবস্ত্র বন্টনের জন্য সেগুলোর খোঁজ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেছে, আমি এখানে আসব বলে, গত তিনদিন ধরে কেনাকাটা করেছি। ৫ হাজার সোয়েটার, ৫ হাজার চাদর ও ৫ হাজার কম্বল এনেছি। মোট ১৫ হাজার শীতবস্ত্র আপনাদের জন্য এনেছি।
সেখানকার জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, যেগুলো এনেছি ওগুলো কি ওদের দেওয়া হয়েছে? জবাবে জেলা শাসক বলেন, না ম্যাডাম, এখনও হয়নি। শুনেই রেগে যান মমতা। রীতিমত স্বর চড়িয়ে বলেন, কেন দেননি? ওগুলো কোথায় রেখেছেন পরিষ্কার করে বলুন। উত্তরে জেলাশাসক হকচকিয়ে বলেন, বিডিও অফিসে সেগুলো রয়েছে। পরক্ষণেই মমতা বলেন, ওগুলো কি বিডিও অফিসে রাখার জন্য কেনা হয়েছে? কেনো থাকবে? আমি তো এখানকার জন্য এনেছিলাম। যাও নিয়ে এসো। আমি তোমার থেকে এসব আশা করিনি।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মাইক হাতে বলতে শোনা যায়, জিনিস দিলেও যদি না পৌঁছয়, তা হলে আমার গায়ে খুব জ্বালা ধরে। প্রশাসন ভুল করলে তো আমাকে মানুষের কথা শুনতে হয়। পুলিশ দোষ করলে আমাকেই দায়ী করে মানুষ। বেগতিক বুঝে ততক্ষণে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বিডিও, জেলা শাসকরা ঠিক মতো কাজ না করলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সভাজুড়ে এইসময় উচ্ছ্বাসের বন্যা করতালির উচ্ছাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে জনতার উদ্দেশ্য বলেন, শীতবস্ত্র আপনাদের বিতরণ করা না হওয়া পর্যন্ত কেউ এখান থেকে যাবেন না। আমিও এখান থেকে যাব না। এ কথা বলেই চেয়ারে বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনার আধঘণ্টা পরে শীতবস্ত্র আসে। তবে তার আগেই শান্ত হন মমতা। পরে মঞ্চে ডেকে বেশ কয়েকজনকে নিজের কেনা শীতপোশাক বিতরণ করেন।
এদিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের শমশেরনগরে অনুষ্ঠান ছিল মমতার। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দুই ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ উপকূলবর্তী অঞ্চল নিয়ে ‘সুন্দরবন’ নামে একটি নতুন জেলা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বিভিন্ন সরকারি কাজে আপনাদের অনেক দূরে যেতে হয়। সেই কথা মাথায় রেখেই নতুন জেলার সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ২৯ নভেম্বর ২০২২
ভিএস/এসএ