মৌলভীবাজার: পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে রেকর্ড সংখ্যক রাজস্ব আয় হয়েছে। সাধারণ পর্যটক, শিক্ষার্থী, বিদেশি পর্যটক এবং পর্যটকের গাড়ি পার্কিং- এই চার ক্যাটাগরিতে তিনদিনে মোট আয় হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার ২৬৩ টাকা।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, এক হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের এই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান পৃথিবীব্যাপী ‘মহাবিপন্ন প্রাণী’ উল্লুকের (Hoolock Gibbon) বড় আবাসস্থল। এই প্রাণীটিকে দেখার জন্য সারাদেশ থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসেন।
উল্লুক ছাড়াও আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন), বাংলাদেশ এর ‘লাল তালিকা’ভুক্ত বহু ‘বিপন্ন’, ‘সংকটাপন্ন’ প্রভৃতি ক্যাটাগরির বহু দিবাচর এবং নিশাচর বন্যপ্রাণীর বিচরণ রয়েছে এখানে।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জ সূত্র জানায়, ঈদের তিন দিন অর্থাৎ শনিবার (২২ এপ্রিল), রোববার (২৩ এপ্রিল) এবং সোমবার (২৪ এপ্রিল) সারাদেশ থেকে মোট আট হাজার ৯৬ জন পর্যটক এসেছেন। এর মধ্যে সাধারণ নারী-পুরুষ পর্যটকের সংখ্যা সাত হাজার ১৯৪ জন, শিক্ষার্থী ৮৮৯ জন এবং বিদেশি পর্যটক এসেছেন ১৩ জন। আর গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে ১৪৬টি।
সূত্র আরও জানায়, সাধারণ পর্যটকের জনপ্রতি প্রবেশ ফি ৫০ টাকা, শিক্ষার্থীর ২০ টাকা, বিদেশি পর্যটকের ৫০০ টাকা এবং গাড়ি পার্কিং গাড়ির ধারণক্ষমতা ভেদে ২৭ থেকে ৪০ টাকা।
এই সব কিছু থেকে আয় হয়েছে যথাক্রমে ঈদের প্রথম দিন এক লাখ ৬৮ হাজার ১৩৩ টাকা, ঈদের দ্বিতীয় দিন এক লাখ ২০ হাজার ৩৭১ টাকা এবং ঈদের তৃতীয় দিন এক লাখ ৭৫৯ টাকাসহ মোট তিন লাখ ৮৯ হাজার ২৬৩ টাকা।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের তিনদিনে আমাদের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পৌনে চার লাখ টাকার রেকর্ড সংখ্যক রাজস্ব আয় হয়েছে। যা অন্যান্য বছর হয়নি। এর থেকে বোঝা যায়, মানুষের ভ্রমণ প্রীতি এবং একঘেঁষেমি জীবনযাপন বা কর্মবন্দী দশা থেকে বের হয়ে মানুষ প্রকৃতির স্বাদ উপভোগ করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, তবে আমরা হতাশার সঙ্গে প্রায়ই লক্ষ্য করি- লাউয়াছড়ায় আগত পর্যটকদের জন্য অবশ্য পালনীয় কিছু নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও এগুলো তারা পালন করছেন না। যেমন- চিৎকার-চ্যাঁচামেচি বা উচ্চস্বরে কথা বলা, সম্মিলিতভাবে গান গাওয়া কিংবা যেখানে সেখানে খাদ্যদ্রব্যের উচ্ছিষ্ট জিনিস না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে ইত্যাদি বিষয়গুলো তারা মানতে চান না। ফলে বনের ইকোসিস্টেমের ওপর চাপ পড়ছে।
এই চিরসবুজ প্রাকৃতিক বন ভ্রমণের জন্য পর্যটকের অবশ্যই বনের ইকোসিস্টেমের প্রতি গুরুত্বআরোপ করে যতটা সম্ভব নিঃশব্দে ঘোরাফেরা করা উচিত বলে জানান এ বন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩
বিবিবি/এসআইএ