ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঋণের কিস্তি চীনের মুদ্রায় পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে আপত্তি জানিয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, রাশিয়ার কাছ থেকে নেওয়া ঋণ ডলারেই পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। পরে রাশিয়ার দেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা ফেরত এবং ঠিকাদারদের পাওনা টাকা পরিশোধের উপায় নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়। এর সমাধান খুঁজতে রাশিয়া যায় বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় রাশিয়া ডলারের পরিবর্তে তার নিজস্ব মুদ্রা রুবলে ঋণের কিস্তি শোধ করতে চাপ দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে রুবল ব্যবহার না হওয়ায় অস্বীকৃতি জানায় বাংলাদেশ। এরপর চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মাধ্যমে ঋণের কিস্তি শোধ করতে একমত হয় বাংলাদেশ ও রাশিয়া।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতাও হয়। এ খবর প্রকাশের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘তৃতীয় দেশের মাধ্যমে’ রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের টাকা লেনদেনে আপত্তি জানায়। ফলে আবারও নতুন বিকল্পের প্রয়োজন হচ্ছে রাশিয়ার ঋণ পরিশোধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি জানেন না বলে জানান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জিয়াউল হাসান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ইউয়ানের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আপত্তি থাকলে তা নিয়ে বাংলাদেশ-রাশিয়া দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আবার আলোচনা হবে। তবে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। তিনি এও বলেন, ঋণ পরিশোধের বিষয়টি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ভালো বলতে পারবে। তাদের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করা হবে এবং তারাই এই চুক্তি সম্পন্ন করবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. আব্দুল মোমিন বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে ডলারে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এখন অন্য কোনো পন্থায় দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কোন পদ্ধতিতে দেওয়া হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
রাশিয়া তাদের মুদ্রার মাধ্যমে চেয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার মুদ্রা বাংলাদেশে নেই। এখন চীনের মুদ্রা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি জানালে বিকল্প চিন্তা করতে হবে; বলেন আব্দুল মোমিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৩
জেডএ