ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিন্ডিকেটের কথা বলিনি: বাণিজ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
সিন্ডিকেটের কথা বলিনি: বাণিজ্যমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ছবি: জিএম মুজিবুর 

ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙবো, এ ধরনের কথা বলিনি। বলেছি হঠাৎ করে জেল-জুলুম দিলে পরে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সিন্ডিকেট নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবেন, এ বিষয়ে বক্তব্য কী জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, সেটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি কিছু বলিনি। উনি কী মিন করে কী সিচুয়েশনে বলেছেন, এই ব্যাপারে আমি কী বলবো!

আপনি বলেছিলেন যে যখন ক্রাইসিস শুরু হয় তখন ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরো বেশি ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে। সে কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদেও আপনি এটি বলেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে কথাটা বলেছিলাম, জেল জুলুম এ ধরনের ব্যবস্থা নিলে পরে...। আমি সেটেল করছি আলোচনার মাধ্যমে। যেটা একটা লজিক্যাল হয়।  হঠাৎ করে জেল জুলুম দিলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আমি এটাই বলেছিলাম। তবে আলোচনা করে আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই।  

তিনি বলেন, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমি বলেছিলাম, প্রয়োজনে সরবরাহ ঠিক রাখতে ডিম আমদানি করা হবে। সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি সব সময়।  

তাহলে কি সিন্ডিকেট বলতে কোনো কিছু নেই বাজারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের একটি বিশাল অর্থ, বিশাল ব্যাপার। আজকে দেখেন সিন্ডিকেটের অল্প কিছু, গ্রামে গ্রামে লাখ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। সেখানে সিন্ডিকেটের কথা বলবো কেমন করে? একজন দুইজন তো ডিমের ব্যবসা করছেন না। এই যে বিশাল জায়গায় দাম বাড়াচ্ছেন তারা। সেটাতো বুঝতে পারি। সব জায়গায়তো সিন্ডিকেটের কথা বলতে পারি না। কিন্তু সুযোগ যে তারা নেন না, তা বলি না।  

কোনো ভাবেইতো বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না, আজ একটি বাড়লে কাল আরেকটির দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, ভারতের বাজার আর আমাদের বাজারের তারতম্য অনেক- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সব বিষয়ে তুলনা করা সম্ভব নয়। ভারতে চিনির দাম কম কারণ তাদের উৎপাদন যেটা হয় চাহিদা মেটানোর পরও রপ্তানি করে। আর আমাদের ৯৯.৯ শতাংশ বাইরে থেকে আনতে হয়। সব জিনিস এক রকম হবে তা কিন্তু নয়। কখনো কখনো কোনো কোনো জিনিস এক রকম হয়। পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল, তখন ভারতে রেশনিং চালু করেছিল। যখন কাঁচা মরিচের দাম বাড়ল তখন কলকাতাতেও ৩৫০ টাকার বেশিতে বিক্রি হয়েছে। এই মুহূর্তে দেখেন পেঁয়াজের ওপর ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে কাজ করে। আমরা বিকল্প সোর্স থেকে আনার চেষ্টা করি। সব কিছু এক রকম নয়। তবে হেবিটটা এক রকম পাশাপাশি দেশ বলে।  

শ্রীলংকার মূল্যস্ফীতি অনেকটা এগিয়েছে, আমরা সে তুলনায় পিছিয়ে আছি- সে বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকা আর আমাদের অবস্থাটা ভিন্ন। শ্রীলংকার বড় যে আয় সেটা হলো পর্যটন খাত। সেটা তারা রিভাইভ করেছে বলে তারা উন্নতি করছে। পাশাপাশি ছোট দেশ সেজন্য তারা উতরে গেছে। আমাদের বিশাল বড় একটা দেশ। আমাদের চেষ্টা চলছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের একটু কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে।  

ডিমের বিষয়ে বললেন, আমি সেদিনও বলেছি, ডিমের দাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দাম নির্দিষ্ট করে দিতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি তারা যে দামটা নির্ধারণ করে দেবে সেই দামই যেন বাজারে থাকে।

টিপু মুনশি বলেন, গ্লোবাল অবস্থাটা দেখেন, আপনারা যখন দেখেন যুক্তরাজ্য ঠিক করে দেয় দোকান থেকে তিনটির বেশি টমেটো কেনা যাবে না, জার্মানিও দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। আমাদের এখানেও নিশ্চয়ই প্রভাব পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হবে তেমন তো নয়, তবে আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। গ্লোবাল এই অবস্থার মধ্যেও যেন আমরা ঠিক থাকতে পারি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
জিসিজি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।