ঢাকা: আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে উৎসে কর হার কমানোর সুপারিশ জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিকিউরিটিজ লেনদেনে উৎসে কর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা ক্লাবে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা উৎসে করকে সহজিকরণ ও যৌক্তিক হারে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করছি। আমাদের দেশের হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
তিনি জানান, প্রতি লাখ টাকায় বাংলাদেশে উৎসে কর দিতে হয় ৫০ টাকা, যেখানে ভারতে ১০ টাকা, পাকিস্তানে ৬৫ পয়সা, সিঙ্গাপুরে ৭৫ পয়সা এবং হংকংয়ে ৫.৬৫ টাকা দিতে হয়। বর্তমানে লেনদেন কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ও কমেছে, কিন্তু আয় না হলেও আয়কর দিতে হচ্ছে।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান আয় আসে লেনদেন কমিশন থেকে। অধিক করের কারণে তারা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। কর হার যৌক্তিকভাবে কমালে বাজার সক্রিয় হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মূলধনী ক্ষতির সমন্বয় ও তা পরবর্তী বছরে বহনের অনুমতি না থাকায় বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তাই আয়কর আইনের নবম অধ্যায়, ধারা ৭০ (৩)-তে সংশোধনী এনে সিকিউরিটিজ লেনদেনের ক্ষতির সমন্বয় ও জের টানার সুযোগ চেয়েছে ডিবিএ।
সভায় বক্তারা বলেন, বিএসইসি এখন জরিমানা ছাড়া তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাজারে আস্থা ফেরাতে বড় পুঁজির বিনিয়োগ প্রয়োজন। ৮ মাসে কোনো আইপিও পেন্ডিং না থাকা ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
তারা অভিযোগ করেন, টাস্কফোর্সে যাদের রাখা হয়েছে, তারা অভিজ্ঞতাহীন। ফোকাস গ্রুপের মতামত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নয়। আয়করেও সমন্বয়হীনতা রয়েছে—লাভ করলে সরকার আয়কর নেয়, কিন্তু লোকসান হলেও কর দিতে হয়। ১৫ বছর ধরে লোকসানে থেকেও ব্রোকাররা কর দিয়ে যাচ্ছে, যা অযৌক্তিক ও অন্যায়।
বক্তারা বলেন, বাজারে দৈন্যদশা চলছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী কমে ১২ লাখে নেমেছে, সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ৫ লাখেরও কম। ভলিউম কমে গেছে, আইপিওগুলো দুর্বল কোম্পানির। বাজারে ঘুরে দাঁড়াতে অন্তত ৪০০-৫০০ কোটি টাকার দৈনিক টার্নওভার প্রয়োজন বলে মত দেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
এসএমএকে/এমজে