এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৮৮ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার দায় পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ দাঁড়ালো দুই হাজার ২৯ কোটি ১২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা ২০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬)।
একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ বা গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫৬৭ কোটি ৭২ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
বুধবার (৭ মে) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্রের দপ্তর।
এর আগে ৯ মার্চ আকুর বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। নিট রিজার্ভ নেমে দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে। এরপর রমজান মাসে প্রবাসী আয় প্রবাহ এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কারণে মোট রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ এপ্রিল মাসেও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ফলে মোট রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। পাশাপাশি নিট রিজার্ভও ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
এই রিজার্ভ থেকে মার্চ–এপ্রিল সময়ের আকুর দায় বাবদ ১৮৮ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলার পরিশোধ করা হয়।
আকু হলো একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস পর বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ইরান, মিয়ানমার ও মালদ্বীপের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের অর্থ নিষ্পত্তি করা হয়। আগে শ্রীলঙ্কাও আকুর সদস্য ছিল, তবে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে তারা বেরিয়ে যায়।
এই মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদী বা রিজার্ভের অর্থ দিয়ে গঠিত বিভিন্ন তহবিলের অর্থ বাদ দিয়ে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এর বাইরেও বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি রিজার্ভের হিসাব করে থাকে, যেটি হলো ‘ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ’। এই ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে না বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার এবং পাইপলাইনে থাকা আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের মত। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এই রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। সে হিসেবে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি ব্যয় কমে আসা, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ইতিবাচক ধারাতে থাকা, বিগত সরকারের সময়ের মত টাকা পাচার না হওয়ার কারণে ডলারের চাহিদা কিছুটা কমেছে। যার প্রভাব পড়ছে রিজার্ভে। এ জন্য রিজার্ভের ক্ষয়ও কম হচ্ছে। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে রিজার্ভের পরিমাণ আরও বাড়বে।
জেডএ/এমএম