ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ

সাতক্ষীরা থেকে রপ্তানি হবে ৩৫০০ মেট্রিক টন

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
সাতক্ষীরা থেকে রপ্তানি হবে ৩৫০০ মেট্রিক টন ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাতক্ষীরা: রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সাতক্ষীরায় উৎপাদিত কাঁকড়া। গেল বছরও সাতক্ষীরা থেকে রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া।

যা এবার সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে জেলা মৎস্য বিভাগ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, লাভ বেশি ও রোগবালাই কম হওয়ায় সাতক্ষীরায় বাড়ছে কাঁকড়া উৎপাদনকারীর সংখ্যা। বাড়ছে খামারের সংখ্যাও।

তবে, বাচ্চা কাঁকড়া পাচার রোধ ও জেলায় কাঁকড়া প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারলে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, জেলায় ২০১৪ সালে ১ হাজার ২৬৪টি খামারে প্রায় ১ হাজার ৫০ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদিত হয়। জেলার ৩০ হাজার ২৫০টি চিংড়ি ঘের থেকে ৯৪০ মেট্রিক টন কাঁকড়া আহরণ করা হয়। এছাড়া সুন্দরবন-নদ-নদী-খাল থেকে আহরণ হয় আরো এক হাজার ১০ মেট্রিক টন কাঁকড়া। যার সবটাই রপ্তানিযোগ্য। এসব কাঁকড়া ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে ৮৩টি ডিপো। প্রায় ১১ হাজার মানুষ কাঁকড়া উৎপাদন ও আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

এদিকে, এ খাতে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ছোট প্লাস্টিকের কেসে (বাক্স) কাকড়া রেখে দুই/তিন সপ্তাহ পরিচর্যা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় মোটাতাজা (ফ্যাটেনিং) করা কাঁকড়া সাতক্ষীরা থেকে চলে যায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

চলতি বছর জেলার প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে কাকড়া মোটাতাজাকরণ শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি গ্রামের কাঁকড়া চাষি বিশ্বজিৎ কুমার মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া উৎপাদনে বেশ লাভ হয়। এছাড়া চিংড়িসহ অন্যান্য মাছের ঘেরে ভাইরাসজনিত কারণে সব সময়ই চিন্তিত থাকতে হয়। কিন্তু কাঁকড়া চাষে এ চিন্তা নেই বললেই চলে।

অনেকেই কাঁকড়া উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু জীব বৈচিত্র্য রক্ষার্থে সুন্দরবন থেকে বাচ্চা কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ হওয়ায় আগ্রহীরা চাইলেই বাচ্চা কাঁকড়া পাচ্ছেন না। চাষিদের আগ্রহের তুলনায় বাচ্চা কাঁকড়ার সংকট দেখা দিতে পারে এখানে। এজন্য দ্রুত এ এলাকায় কাঁকড়া প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

সেই সঙ্গে যাতে বাংলাদেশ থেকে কাঁকড়ার বাচ্চা পাচার না হয়- সেদিকেও খেয়াল রাখার অনুরোধ জানান এ কাঁকড়া চাষি।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশের মোট রপ্তানিকৃত কাঁকড়ার এক-তৃতীয়াংশ সাতক্ষীরা থেকে রপ্তানি হয়। জেলায় কাঁকড়া চাষের আওতা বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৫ হেক্টর বেশি জমিতে কাঁকড়া মোটাতাজা করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারিভাবেও কাঁকড়া মোটাতাজাকরণের ৫০টি প্রকল্প রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সাতক্ষীরায় উৎপাদিত কাঁকড়া গুরুত্বপূণ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।