ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘বিমা জগতে নৈতিকতার অভাব রয়েছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
‘বিমা জগতে নৈতিকতার অভাব রয়েছে’ ছবি: জি এম মুজিবুর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিমা জগতে নৈতিকতার অভাব রয়েছে। মানুষ ইন্স্যুরেন্স করেন, কিন্তু বেশিরভাগই ক্ষতিপূরণ পান না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।


 
বুধবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘বিমা মেলা ২০১৬’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
 
তিন দিনব্যাপী ‘নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য বিমা’ স্লোগানে প্রথমবারের মতো এ বিমা মেলার আয়োজন করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিমা জগতে নৈতিকতার অভাব রয়েছে। বেশিরভাগ সময়েই মানুষ ইন্স্যুরেন্স করেন, কিন্তু ক্ষতিপূরণ পান না। তবে বিমা কর্তৃপক্ষ বেশ ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অতীতের চেয়ে বিমার বিকাশ খুব মন্দ নয়।

তিনি বলেন, বিমা কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অপরিহার্য। অনেক ব্যবসাই আছে বিমা করে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। ইন্স্যুরেন্সের বড় খাত হলো জীবন বিমা। কিন্তু আমাদের কয়েকটি বিমা সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমাদের দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কর্মীর সংখ্যার দিক দিয়ে বিমা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। তবে বিমা আমাদের দেশে একটু নতুন ব্যবসা বলা যেতে পারে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, ব্রিটিশ আমলে ব্যক্তিগতভাবে বিমার প্রচলন হয়। এরপর অনেকদিন পর ১৯৩৮ সালে আইন হয়।
 
সবশেষে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিমা আইন ও বিমা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা হয়। ফলে বিমা খাত আমাদের দেশে অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত খাত হিসেবেই গড়ে ওঠছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রামগঞ্জে বিমা খাতের প্রতি যে মিশ্র ধারণা আছে তা সংস্কার ও বিমা প্রতিনিধিদের ভালোভাবে বীমার বিষয়কে তুলে ধরার আহ্বান জানান।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, এখনও বিমা খাত খুব বেশি এগোতে পারেনি। তার অন্যতম কারণ হলো বিমার ধারণাটি জনসাধারণের কাছে খুব পরিস্কারভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া বিমা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিমার জন্য যতোটুকু কথা বলেন, তার চেয়ে নিজের জন্য বেশি কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফলে বিমা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। বিমা দাবি নিস্পত্তির সময় একটু বেশি লাগার কারণেও বিমার প্রতি অনাগ্রহ দেখা যায়। কৃষিতে বিমার প্রচলন বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান তিনি।
 
সভাপতির বক্তব্যে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ (একচ্যুয়ারি) বলেন, যেকোনো দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বিমা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো বিমা সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি। তবে বর্তমানে এগিয়ে যাচ্ছে।
 
তিনি জানান, গত বছর প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি ক্লেইম বা বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। সুতরাং, বিমা প্রতিষ্ঠান ক্লেইম পরিশোধ করতে পারে না- এ ধারণা ভুল।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ইউসুফ আলী ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির আহম্মেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিআরএ’র সদস্য ও মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি কুদ্দুস খান। অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করে সম্মানিত করা হয়।
 
বিমা মেলায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলাটি প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে। দর্শনার্থীদের জন্য এ মেলা উন্মুক্ত। প্রতিদিন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে এ মেলা থেকে।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
একে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।