ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আসছে অটোমোবাইল নীতিমালা, কমবে মোটরসাইকেলের দাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
আসছে অটোমোবাইল নীতিমালা, কমবে মোটরসাইকেলের দাম ছবি: রানা

মোটরসাইকেলসহ অটোমোবাইল খাতে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

ঢাকা: মোটরসাইকেলসহ অটোমোবাইল খাতে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এর মাধ্যমে বাজারে মোটরসাইকেলের দাম কমবে বলে জানান তিনি।

রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে ‘বাজাজ ভি’ মোটরসাইকেলর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিষয়টি জানান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি কমাতেও শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই সিনিয়র সচিব বলেন, বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি গাড়ি বা মোটরসাইকেল সংযোজনের কাজ করছে। তবে বাংলাদেশকে মোটরসাইকেল বা গাড়ি সংযোজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ দেখতে চাই না। আমরা উৎপাদনকারী হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চাই। এজন্য সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। যা নিয়ে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা হবে।

মোশাররফ হোসেন বলেন, অটোমোবাইল কোম্পানিগুলোর পরিকল্পনা নিয়ে রাজস্ব বোর্ডে দিলে সুদ সুবিধাও পাবে। আর সে সুবিধায় খরচ কমলে মোটরসাইকেলের বিক্রয়মূল্য কমে যাবে। তখন আমাদের দেশে মোটরসাইকেল আরও বেশি বিক্রি হবে।

‘ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশে বাংলাদেশের চেয়ে জনসংখ্যা কম হওয়া স্বত্ত্বেও মোটরসাইকেলের ব্যবহার এবং বার্ষিক বিক্রি অনেক বেশি। কারণ, সেসব দেশে মোটরসাইকেল অনেক সস্তা। আমাদের দেশে রেজিস্ট্রেশেন ফিও বেশি। এটা কমাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে সফল হলে মোটরসাইকেলের দাম কমবে’- যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সরকার শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের দেশটি ছোট হলেও জনসংখ্যা প্রচুর। কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাত কোটি জনসংখ্যা, এখন ১৬ কোটিতে পরিণত হলেও আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্রি ব্যবহারের ফলেই তা হয়েছে। কিন্তু এর একটি শেষ বিন্দু আছে। কৃষিকে আরও খুব বেশি দূর এগিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই দেশের উন্নয়নের জন্য শিল্পের উন্নয়ন দরকার। সরকার প্রাইভেট সেক্টরের উন্নয়নের জন্য শিল্পের উন্নয়নেই বেশি জোর দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা শিল্পনীতিতে বলেছি, বর্তমানে জাতীয় আয়ে শিল্পের অবদান প্রায় ২৯-৩০ শতাংশ। সেটিকে ২০২১ সালের মধ্যে ৩৫ ভাগে উন্নীত করতে চাই। সে লক্ষ্যে প্রাইভেট সেক্টরকে প্রণোদনা দেওয়ার কিছু নীতিমালা গ্রহণ করেছি।

অনুষ্ঠানে ‘বাজাজ ভি’ মোটরসাইকেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে মোটরসাইকেল সেক্টরে কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। ফলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী ব্যবসায়ী বান্ধব অটোমোবাইল নীতিমালা জরুরি।

নতুন নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার, শিল্প , ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জনগণ সবাই লাভবান হবে। এই সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণেও সাহায্য করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত প্রসংশার দাবিদার। আশা করছি তাদের হস্তক্ষেপে একটি সুন্দর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সেক্টর আরও উন্নতি লাভ করবে।

মতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত মোটরসাইকেলের ওপর ১২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যা গাড়ি আমদানির সমান। আকাশচুম্বী শুল্কের পরে মোটরসাইকেল সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। মোটরসাইকেলের আমদানি শুল্ক হ্রাস করলে ভোক্তারা যেমন উপকৃত হবে, তেমনি বাজার বাড়বে। তাতে দেশে মোটরসাইকেল তৈরি শিল্প বাড়বে।

একই সঙ্গে ১৫০ সিসির ওপরের মোটরসাইকেল আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে,  এটি শিথিল করে ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল আমদানির অনুমতি দেওয়ার আহবানও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
জেপি/টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।