ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই জিএসপি বাতিল হয়েছিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই জিএসপি বাতিল হয়েছিল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের অবাধ বাজার সুবিধা (জিএসপি) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে স্থগিত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের অবাধ বাজার সুবিধা (জিএসপি) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে স্থগিত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রে আগামীতে নতুন যে সরকার গঠন হচ্ছে, সেই সরকারের এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য থাকবে না বলে আশা করি।

কারণ, অতীতে যখন জিএসপি বাতিল করা হয়েছিল তখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। আমাদের দেশেরও কোনো কোনো নেতা-নেত্রী জিএসপি বাতিল চেয়েছিলেন।

তবে বাণিজ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা বাতিল করা হয়েছিল এটা ঠিক নয়। কী কারণে বাতিল করা হয়েছিল, কী সমস্যা রয়েছে সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।

রোববার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলেনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তোফালে আহমেদ ও বার্নিকাট।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী মাসে নির্ধারিত টিকফা বৈঠকটি হচ্ছে না। আগামী মার্চ বা এপ্রিলে এ বৈঠক হতে পারে। টিকফার বৈঠক না হওয়া প্রসঙ্গে জানাতেই বার্নিকাট সচিবালয়ে এসেছিলেন বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, জিএসপি’র জন্য যে শর্তগুলো ছিলো আমরা সেটা প‍ূরণ করেছি। কারখানাগুলো ভালোভাবেই চলছে। শ্রমিকদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা কারখানায় যাচ্ছি, শ্রমিকরা কোনো সমস্যার কথা বলছে না। অনেক দেশ আছে যাদের জিএসপি পাওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই অথচ তারা জিএসপি সুবিধা পাচ্ছে। আশা করি আগামীতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকবে না। যদিও বাংলাদেশ এ সুবিধা পেলে খুব বেশি লাভবান হবে তা নয়। তবে এটা সম্মানজনক।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ডিসেম্বরে টিকফার যে সভা হওয়ার কথা ছিলো সেটা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠন হতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে। টিকফার সভা হয় মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে। মার্চ বা এপ্রিলে সুবিধাজনক সময়ে এই সভা হবে। আমরা নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছি। সরকার পরিবর্তন হলেও নীতির খুব একটা পরিবর্তন হয় তা নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার যে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার মধ্যে টিপিপি বাতিল করার কথা আছে, এটা ভালো সংবাদ। শ্রমিক সংগঠন নিয়ে আমাদের ওপর সব সময় প্রচণ্ড চাপ থাকতো। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। আগামীতে এই সম্পর্ক আরও উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা আরও রফতানি করতে পারবো বলেও আশা করি। যে উদ্দেশ্যে টিকফা গঠন করা হয়েছিলো সেটা এগিয়ে যাবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই বাংলাদেশের উন্নয়নের আরও সুযোগ আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বার্নিকাট বলেন, শ্রমিক সংগঠন কতগুলো আছে সেটা দেখার বিষয় না। দেখতে হবে শ্রমিকরা সংগঠন করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। সমস্যা হলে তার সমাধান করতে হবে।

বার্নিকাট বলেন, ডিসেম্বরে টিকফা বৈঠক হচ্ছে না। আগামী বছর মার্চ/এপ্রিলে সুবিধাজনক সময়ে এটা হবে। এই সময় নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণে ব্যস্ত থাকবে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) মন্ত্রী পদমর্যাদার। প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে  ইউএসটিআর-এরও পরির্বতন হয়। নতুন ইউএসটিআর নির্বাচিত হওয়ার পর মার্চ/এপ্রিলে বৈঠক হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬/আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।