বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে তথ্য রয়েছে যে, কোম্পানিটির ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে ১০৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় করতে পারবে ৬৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
সে হিসাবে গত সাত বছরের ৩৮ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা বিমা আইন-২০১০ এর ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা-১৯৫৮ এর লঙ্ঘন।
অবৈধ এ ব্যয়ের মধ্যে ২০০৯ সালে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৯ কোটি ১ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে।
অবৈধ ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের পাশাপাশি কোম্পানিটির সর্বশেষ তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে বিশেষ অডিট ফার্ম (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস কোম্পানিকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
সূত্র জানায়, বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ইউনাইটেডের ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকা, ট্যাক্স ও ভ্যাট, চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা কি পরিমাণ সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন তার পর্যালোচনাসহ কোম্পানির এ তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।
বিমা আইন ২০১০’র ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে কোম্পানিগুলোতে এ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২ মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়টি চিঠি দিয়ে কোম্পানিগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে আইডিআরএ।
বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিমা আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে- আইনের অন্য কোনো বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিমা ব্যবসা পরিচালনাকারী যেকোনো বা সব বিমা কোম্পানির বিমা সংক্রান্ত সব লেনদেন, রেকর্ডপত্র, দলিল দস্তাবেজ, প্রবিধানের মাধ্যমে নির্ধারিত পদ্ধতিতে এক বা একাধিক নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষা করাতে পারবে।
ধারায় আরও বলা হয়েছে, এ ধারার অধীনে নিয়োজিত নিরীক্ষক বিমাকারীর বিমা ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড, হিসাব বই, রেজিস্টার, ভাউচার, পত্র এবং অন্য সব দলিল পরিদর্শন করতে পারবে এবং এ উদ্দেশ্যে বিমাকারীর যেকোনো পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বক্তব্য শুনতে এবং বিমাকারীর কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র ও তথ্য তলব করতে পারবে।
ধারা অনুসারে নিরীক্ষা কাজের জন্য নিয়োগ পাওয়া নিরীক্ষক সর্বোচ্চ ৪ মাসের মধ্যে একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। প্রতিবেদনের ৪টি কপি আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে হবে।
আইডিআরএ সদস্য জুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, বিমা কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
এমএফআই/জেডএস