শনিবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর চকবাজারের মৌলভীবাজার ও রহমতগঞ্জ পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারিতে কেজিপ্রতি ছোলার দাম বেড়েছে ৫ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৯০ টাকা।
চকবাজারের মৌলভীবাজার ঘুরে দেখা যায়, উন্নতমানের অস্ট্রেলিয়ান ছোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৮৫ টাকা। এছাড়া একটু নিম্নমানের ছোলাও বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা।
দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে খুচরা ছোলা বিক্রেতা হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত সপ্তাহে ছোলা ভালোটা বিক্রি করেছি ৮৫ টাকায়। আর একটু খারাপটা ৮০-৮২ টাকা। কিন্তু বুধবার থেকেই হঠাৎ পাইকারি বাজারে ছোলা নেই। আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।
ছোলার দাম কেমন জানতে চাইলে চকবাজারের মৌলভীবাজারে ছোলা কিনতে আসা রবিউল খান বাংলানিউজকে জানান, ছোলার দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়ে গেছে। তিনি প্রতিনিয়ত ছোলা খান। তাই ছোলার দাম বাড়া-কমার হিসাবটা ঠিক মনে রাখেন। এটাও জানালেন, ছোলা মূলত আসে বিদেশ থেকে। এটা পুরাই আমদানি নির্ভর একটি ভোগ্যপণ্য। প্রতিবছর রোজার আগেই ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে- ‘মার্কের্টে মাল নেই দাম বাড়াও’। এটা তাদের নতুন কৌশল। এবারও তাই হতে চলেছে। সরকার যাই বলুক দাম বাড়বে।
হঠাৎ করেই ছোলার দাম বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রহমতগঞ্জের পাইকারি ছোলা ব্যবসায়ী ও বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম ৫ টাকা করে কেজিতে বেড়েছে। গত সপ্তাহে যা ৭৫-৭৬ টাকা ছিলো। এছাড়া গত পাঁচ থেকে ছয় মাস স্থির ছিল পণ্যটির দাম। তখন ৮০ টাকা দরেই বিক্রি হয়েছে। এখন ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতবছর রমজানের আগে ছোলার দাম ছিল আরও বেশি। ১০০ টাকায় ছোলা বিক্রি হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও বেড়েছে। রমজানের আগে দাম আরও বাড়বে।
ছোলা মূলত বিদেশ থেকে আসে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। তারপর পণ্যটি সারা দেশে সরবরাহ করেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। তারাই মূলত দাম বাড়ান আবার কমান। তবে যেটার দাম বাড়ে সেটার দাম কি আর কমে? অন্যদিকে ডলারের দাম বাড়ার কারণেও পণ্যটি আমদানিতে খরচ বেশি হচ্ছে।
এ কারণেও দাম বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া কাস্টমসের তথ্যমতে, বিগত ২০১৬ সালে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার টন। যা দিয়ে একটি রমজান শেষ করে আগামী রমজান পার করে আরও কয়েক মাস পর্যন্ত চলার কথা। আর চলতি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মোট ছোলা আমদানি হয়েছে আরও ৫৬ হাজার টন। তবে আমদানি করা ছোলা সবচেয়ে বেশি আসে অস্ট্রেলিয়া থেকে। মায়ানমার থেকে ছোলা আসে, তবে কম।
প্রতিবছর দেশে ছোলার চাহিদা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টন। আর প্রতি মাসে ছোলার চাহিদা ১২ হাজার টন হলেও রমজানে ছোলার চাহিদা বেড়ে এক মাসেই ৫০ হাজার টনে উন্নীত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এসজে/এসআরএস/এএ