রোববার (১৪ মে) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন চিত্রের ওপর একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল) চিমিয়াও ফান এবং ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমষ্টিক অর্থনীতি স্থির থাকলেও মুদ্রা বিনিময় হার, রাজস্ব অাদায় এবং তারল্য ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ। গত বছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে রপ্তানি প্রায় অর্ধেক। শুধুমাত্র অার্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার ফলেই রেমিট্যান্স কমেনি। বরং পশ্চিমা বিশ্বের অভিবাসন নীতির জটিলতা এবং অভিবাসীরা টাকা পাঠাতে ব্যাংক বিমুখতার কারণও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনটি সূচক প্রধান ভূমিকা রাখে। এগুলো হলো- রফতানি, রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগ। এর মধ্যে বিনিয়োগ পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো থাকলেও অন্য দু’টির পারফরম্যান্স ভালো নয়। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ছিলো প্রায় ৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এর অন্যতম কারণ রফতানি কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়ার আশা করা হচ্ছিলো সে হারে বাড়বে না।
অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ ব্যাপক হারে কমে গেছে। জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের মতো। এটা যে কেবল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে কমেছে তা নয়। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের অন্য দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স কমেছে। রেমিট্যান্স ও রফতানি খাতের আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় প্রবৃদ্ধিও আশানুরূপ হারে বাড়ছে না বলে বিশ্বব্যাংক মনে করে।
৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বেশকিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
এর মধ্যে প্রধান- নারী কর্মসংস্থান বাড়ানো। বর্তমানে এ হার ৩৫ শতাংশ। নারীর অংশগ্রহণ ৪৫ শতাংশে উন্নীত করতে পারলে ২০২০ সাল নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বাড়বে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা বাড়াতে পারলে প্রবৃদ্ধি দশমিক ২১ থেকে দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হবে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বর্তমানে ১ টাকার সরকারি ব্যয়ের বিপরীতে ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ পয়সার সমান। বাকিটা অপচয় হচ্ছে। এ অপচয়রোধ করা গেলে প্রবৃদ্ধি আরেক ধাপ বাড়বে। পাশাপাশি কৃষিতে বর্তমানে উদ্বৃত্ত শ্রমশক্তি নিয়োজিত রয়েছে। তাদেরকে শিল্প ও সেবাখাতে নিয়োগ দিলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে মূলধনী যন্ত্রাংশ আমদানিতে ঋণপত্র অনেক বেড়েছে। এর আঁড়ালে অর্থ পাচার হতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭/আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা
এমএন/জেডএস