এছাড়া ভোক্তা পর্যায়েও কোনো খরচ বাড়বে না। কারণ বর্তমান আইনে ১৫টি সেবা এবং ৭০টি পণ্য ছাড়া সব ক্ষেত্রে ১৫ ভাগ ভ্যাট দিতে হয়।
শনিবার (২০ মে) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের সম্মেলন কক্ষে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প আয়োজিত ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ বাস্তবায়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় এনবিআরের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিভিন্ন প্রিন্ট ও টেলিভিশন মিডিয়ার বিজনেস এডিটররা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সংবাদকর্মীরা আলোচনা সভায় অংশ নেন।
আবাসন খাতে ভ্যাটের কোনো প্রভাব পড়বে না জানিয়ে সভায় আরও জানানো হয়, আবাসন খাতে ভ্যাট আরও হ্রাস পাবে। বর্তমানে ভূমি বিক্রিতে ভ্যাট দিতে হয়, তবে নতুন আইনে তা সম্পূর্ণ অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়িত হলে ভ্যাটের হারের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না। পণ্যের দাম যেহেতু বাড়বে না সেহেতু মূল্যস্ফীতি বাড়ার কোনো কারণ নেই।
তবে ঘরবাড়ি নির্মাণ সামগ্রীর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তা দশমিক ৬ শতাশের বেশি বাড়বে না।
এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ্বে গড় ভ্যাট হার ১৬.৫ শতাংশ, আর আমাদের ১৫ শতাংশ। নতুন আইনে ভ্যাটের হার বাড়ছে না। ভারতে যেসব পণ্যে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ, আমাদের দেশে সেসব পণ্যে ভ্যাট হার একেবারেই শূন্য। অনেক দেশে ভ্যাটের হার ৬ থেকে ৭ ভাগ। কিন্তু সেসব দেশে কর রেয়াত নেওয়ার সুযোগ নেই। নতুন আইনে হিসাব রাখলে রেয়াত নেয়া সহজ করা হয়েছে। উপকরণ রেয়াত নেয়া যাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি।
ভ্যাটের কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়বে কিনা একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এর ফলে কোনো খরচ কমবেও না, আবার বাড়বেও না। বিদ্যুতে বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে ৫ ভাগ ভ্যাট দিতে হয়। নতুন আইনে ১৫ ভাগ দিতে হবে। তা সত্ত্বেও বিদ্যুতে ভ্যাটের কোনো প্রভাব পড়বে না।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরকারের একটি ভর্তুকিযুক্ত পণ্য। দেশের বেশিরভাগ বিদ্যুৎ গ্যাস দিয়ে উৎপাদিত হয়। সরকার বিদ্যুতে ভতুর্কি না দিলে এর দাম আরও অনেক বেশি হত। যদি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সঠিকভাবে উপকরণ কর রেয়াত নেই, ভতুর্কি বহাল থাকে তাহলে কোনো অবস্থায় দাম বাড়বে না। শুধু বিদ্যুৎ নয় যেকোন খাতে সরকার চাইবে না ভ্যাটের কারণে দাম বাড়ুক।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮ লাখ ৬৪ হাজার রয়েছে। ইতোমধ্যে অনলাইনে প্রায় ১৫ হাজার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়েছেন। এরমধ্যে প্রায় ৯ হাজার নতুন প্রতিষ্ঠান। আমরা ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন মেলা করছি। যারা ভ্যাট দেয়ার যোগ্য সেসব প্রতিষ্ঠানকে এর আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ব্যবসায় সঠিকভাবে রাখলে রেয়াত নেয়া সহজ হবে। রেয়াত নেয়ার ক্ষেত্রে ডেডো অফিসে যেতে হবে না। ডেডোর যে সীমাবদ্ধতা ছিল তা নতুন আইনে সহজ করা হয়েছে।
ভ্যাট দেবে ভোক্তা, ভ্যাট বিষয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে এনবিআর কথা বলেনি, একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ক্যাবের মাধ্যমে আমরা ভোক্তাদের আশ্বস্ত করেছি দাম বাড়বে না। আইন যখন প্রণীত হয়েছে সেখানে ভোক্তাদের প্রতিনিধি সংসদ সদস্যরা ছিলেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন) ও ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল হাসান। নতুন ভ্যাট আইনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে উপস্থাপনা দেন ভ্যাট অনলাইন উপ পরিচালক মুহম্মদ জাকির হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
এসএইচ