ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজেট নিয়ে সিলেটে ব্যবসায়ী নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৭
বাজেট নিয়ে সিলেটে ব্যবসায়ী নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া বাজেট নিয়ে সিলেটে ব্যবসায়ী নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া (ফাইল ফটো)

সিলেট: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ঘোষিত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সিলেটে ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সমন্বয় সাধনে সব বিষয় সমন্বয় করে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেটে সর্বাধিক আয়ের উৎস ধরা হয়েছে রাজস্ব খাতে।

তাই ব্যবসায়ীদের ওপর নতুনভাবে করারোপ না করে রাজস্বের পরিধি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে ভ্যাটের পরিমান কমানো হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। পাশাপাশি বাজেটে মানবসম্পদে বরাদ্দ প্রাধান্য দেওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তারা।     

বৃহস্পতিবার (০১ জুন) ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নব নির্বাচিত সভাপতি খোন্দকার শিপার আহমদ বলেন, এই বাজেট সিলেটের কৃতি সন্তান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ১১তম বাজেট। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের নবম বাজেট।

বিশালাকারের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এবার বাজেটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিখাত। সরকার কৃষিখাতকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাজেটে বিশাল বরাদ্দ রাখা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি। বাজেটে সড়ক ফোরলেন করার বিষয়টি প্রধান্য পেয়েছে। তা বাস্তবায়ন হলে সিলেটে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবসম্পদ বিদেশে সমাদৃত। তাই মানবসম্পদ উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর ফলে দক্ষজনশক্তি গড়ে বিদেশের মাটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিলে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাবে। তবে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে রাজস্বের পরিমান ১৫ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনলে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।

তবে ব্যাংকে লেনদেনের ওপর করারোপ করার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি স্বর্ণলতা রায় বলেন, বাজেটে উদ্যোগগুলো সঠিক সময়ে শেষ হলে সুফল বয়ে আনবে। এই উদ্যোগগুলো যেনো দীর্ঘমেয়াদী থেকে না যায়। তাছাড়া সরকার যেহেতু নারীদের উন্নয়ন চায়, তাই নারী উদ্যোক্তাদের ওপর ভ্যাট আরোপ না করাই শ্রেয়। এতে নারীরা ব্যবসায় এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সাড়ে ৩৬ শতাংশ নারী উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।

তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ কর বৃদ্ধিতে সবার সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। এজন্য নতুন করে করারোপ না করে সবার কন্ট্রিবিউশন প্রয়োজন। করের বাইরে যারা আছেন তাদের করের আওতায় আনতে সরকারকে জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে।

স্বর্ণলতা বলেন, শিল্পখাতে প্রণোদনা বাড়ানো উচিত। শিল্পখাত সমৃদ্ধ হলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। দেশের স্বার্থে অর্থমন্ত্রীর এই বাজেট। বড় আকারের বাজেট হওয়াতে আমরা ক্রমশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দিকে যাচ্ছি। আমাদের জিপিডির প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।

সিলেট মেট্টোপলিটন চেম্বারের পরিচালক ও হোটেল গেস্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাহমিন আহমদ মানবসম্পদ, নারী উন্নয়ন, কৃষি সম্প্রসারণে ও হাওরে বরাদ্দ ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও ব্যবসায়ীদের জন্য এই বাজেট তেমন সুখকর নয় মনে করেন তিনি।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রির সাবেক প্রশাসক ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সনাক) সিলেটের সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ বলেন, এ বাজেট আমলাদের তৈরি। রাজনীতিবিদদের দেওয়া বাজেট হলে তা আরও জনবান্ধব হতো। এটা একটা ঘাটতি বাজেট এবং থোক বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। থোক বরাদ্ধটি কিভাবে বন্টন হবে সেটিও একটি প্রশ্ন। এক কথায় বলতে গেলে বাজেটটি জনগণের প্রত্যাশানুযায়ী হয়নি। ঘাটতি বাজেটের কারণে ব্যাংকগুলোর উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাছাড়া জনগনের ওপর এ বাজেট মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও তিনি মনে করেন। তিন বছর ধরে ১৫ ভাগ ভ্যাট প্রধানের বিষয়টি মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৭
এনইউ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।