২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বরাদ্দ ছিলো ২৫২ কোটি টাকা। ‘অন্তর্বর্তীকালীন পানি সরবরাহ’ প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে ৬১২ কোটি টাকা ও মেয়াদ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত।
ঢাকা ওয়াসার অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রস্তাবনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আগামী মঙ্গলবার (০৬ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় পানি সরবরাহ করে থাকে ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে প্রতিদিন ২৪০ কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হয়, যার ৮০ শতাংশই ভূ-গর্ভস্থ পানি। ৬৭০টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে নেওয়া হয়।
রাজধানীর ৫টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে এ পানি শোধন করে গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশ হারে পানির উৎপাদন কমলেও ৫ শতাংশ হারে চাহিদা বাড়ছে।
বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর লোক সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ এবং পানির চাহিদা প্রতিদিন ২৪০ কোটি লিটার। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে মানুষ বাড়ছে এবং ২০২০ সাল নাগাদ এ শহরের জনসংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছাবে। জনগণের জীবনযাত্রার মান বেড়ে যাওয়ায় পানির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর দৈনিক পানির চাহিদা হবে ৩০০ কোটি লিটার।
ওয়াসা’র দাবি, ঢাকা নগরীতে প্রতি বছর গড়ে ১০০টি গভীর নলকূপ রি-জেনারেশনের প্রয়োজন হয়। এছাড়া ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ৭০ কিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বাড়তি অংশে পানির লাইন স্থাপনে অতিরিক্ত রাস্তা কাটতে হবে। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে।
মূল প্রকল্পের একক দর ঢাকা ওয়াসার ২০১১ সালের রেট সিডিউল অনুসারে ব্যয় ধরা হয়েছে। বর্তমানে গভীর নলকূপ ও পানির লাইনের জন্য নতুন রেট সিডিউল এবং নির্মাণ কাজের গণপূর্ত অধিদফতরের সর্বশেষ রেট সিডউল অনুসারে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধন করায়ও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মালামাল ও নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নলকূপ কম্পাউন্ডে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় পাম্প হাউজ, বাউন্ডারি ওয়াল, জয়েন্ট ইত্যাদি ভেঙে কাজ করতে হচ্ছে। কাজ শেষে পুনর্নির্মাণ করতে হয়, ফলে ব্যয় বাড়ছে।
২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত পানি সরবরাহ অটুট রাখতে ১৬২টির স্থলে ৩৭৫টি গভীর নলকূপ স্থাপন করতে হবে। অন্যদিকে ৩০টির স্থলে ১২০টি গভীর নলকূপ রি-জেনারেশন করতে হবে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত আনুষঙ্গিক মালামাল ও সরঞ্জামাদি কেনার ফলে ব্যয় বাড়ছে।
অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের (পানি সরবরাহ উইং) যুগ্ম প্রধান আবু মো. মহিউদ্দিন কাদেরী বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা নগরীর অনেক স্থানেও পানির গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়নি। অতিরিক্ত পানির চাহিদা মেটাতে এসব স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন ছাড়াও আরও কিছু নতুন নতুন কাজ করতে হবে। সে লক্ষ্যে প্রকল্পটির সময়-ব্যয় বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর