রাজধানীর শ্যামপুর, কমলাপুর, ফকিরাপুল, সেগুন-বাগিচা, মালিবাগ এবং কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাস দু’য়েক আগেও যেসব দোকানে পাট ও কাগজের ব্যাগে পণ্য বিক্রি হতো, এখন সেসব দোকানে পলিথিনের ব্যাগে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (০৯ জুন) সরকারি ছুটির দিনে বাজারগুলোতে ক্রেতা সমাগম ছিলো চোখে পড়ার মতো।
ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুড়াসহ মোট ১৭টি পণ্যের সংরক্ষণ এবং এসব পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। কিন্তু সেই প্লাস্টিক ও পলিথিনে আবারও সয়লাব হয়ে পড়েছে বাজার। ব্যবসায়ী কিংবা ক্রেতা কেউ পাটজাত মোড়কের ব্যবহার করেছেন না।
শ্যামপুরে আজিজ মেসার্স চালের আড়ৎ মালিক আতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নাজিরশাইলসহ দু-তিন ধরনের চাল এখন প্লাস্টিকের বস্তায় বিক্রি হয়। তবে অন্যসব ধরণের চাল পাটের বস্তায় বিক্রি করছি। আস্তে আস্তে প্লাস্ট্রিকের বস্তা উঠে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। একই বাজারে প্লাস্ট্রিকের বস্তায় পেঁয়াজ ও রসুন বিক্রি করতে দেখা গেছে।
শ্যামপুরের মেসার্স জহির অ্যান্ড ব্রাদাসের আড়তের মালিক আনিসুল হক বলনে, নেটের বস্তা পাটের থেকে হলকা। এগুলো চীন-ভারত থেকে সরাসরি আসে। বিশেষ করে রসুন, আদা ও হলুদ পণ্যেও এসব প্লাস্টিকের নেট ব্যবহার করা হয়। ’
কমলাপুরের নাহিদ স্টোরে মালিক স্বপন সরকার বলেন, চিনি, লবণ, আঠা এবং মরিচসহ বেশ কিছু পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক হলেও পলিথিনের ব্যাগ ছাড়া এসব পণ্য কিভাবে বিক্রি করবেন?
ফকিরাপুলের মুদি দেকানদার আবুল কালাম বলেন, পাটের মোড়কে পণ্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছি বলে শুনেছি। কিন্তু আমরা ডাল, চিনি, আঠা, ময়দা প্লাস্টিকের মোড়কেই বিক্রি করছি।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, আইন লঙ্ঘন করবে যারা পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ জন্য আমরা কাজ করছি, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তবে, সবাইর সহযোগিতা ছাড়া এ কাজ কখন সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৩ জুন পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা করা হয়। এরপর প্রথমে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনিসহ মোট ৬টি পণ্য এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১১টি পণ্যসহ মোট ১৭টি পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার করা হয়।
কোনো প্রতিষ্ঠান এ আইন না মানলে অনূর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনাধিক ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ আইন বাস্তবায়নে গত ১৫ মে থেকে সারাদেশে বিশেষ অভিযান চালু করে সরকার। অভিযানে বেশকিছু কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হয়েছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৭
এমএফআই/ওএইচ/বিএস