মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুর ২টার দিকে খুলনার সাত রাস্তার মোড়ের সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনে করে কলকাতায় যাওয়ার সময় আজিজুর রহমান নামে এক যাত্রী বাংলানিউজকে এমনটিই জানালেন।
তিনি বলেন, খুলনা থেকে সরাসরি কলকাতায় যাওয়া যাচ্ছে।
দুই মেয়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে কলকাতায় যাচ্ছেন বলে জানান ট্যুরস ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান।
তাদের মতো এ পরিবহনে অনেক নারী-পুরুষ যাত্রীই ঈদের কেনাকাটা করতে কলকাতায় যাচ্ছেন।
সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের খুলনা কাউন্টার ম্যানেজার শেখ মেরাজ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কাস্টমস-ইমিগ্রেশনে জটলা না থাকলে খুলনার সাত রাস্তার মোড় থেকে কলকাতার নিউ মার্কেট পর্যন্ত মাত্র ৪ ঘণ্টায় যাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে খুলনার শপিং প্রিয় বিত্তবানরা কেনাকাটা করতে ছুটছেন কলকতায়।
তিনি জানান, খুলনা থেকে কলকাতা যেতে ৮শ’ টাকা টিকিট ভাড়া। যাত্রীদেরও আমরা নাস্তা ও পানির ব্যবস্থাসহ সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি। যে কারণে যাত্রীরা সন্তুষ্ট বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার খুলনা থেকে ৩০ জন কলকাতায় যাচ্ছে।
সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের খুলনা কাউন্টার ইনচার্জ শেখ ইফতেখার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় অনেকে কলকাতা থেকে সরাসরি ঈদবাজার করছেন। তারা কলকাতার নিউ মার্কেট, বড় বাজার, গড়িয়া হাট, বিগ বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেট থেকে কেনাকাটা করেন।
কলকাতায় কেনাকাটা করতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে খুলনাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মধ্যবিত্ত আর নিম্ন আয়ের বিপণিবিতানে কেনাবেচা জমে উঠলেও সেই তুলনায় অভিজাত মার্কেটগুলো তেমন জমেনি। বেশির ভাগ ব্যবসায়ীদের মতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত, সরাসরি বাস সার্ভিসের ভাড়া কম ও ভিসা সহজ হওয়াই খুলনাঞ্চলের বিত্তবানরা কলকাতামুখী। এতে খুলনার ব্যবসায়ীদের কেচা-কেনা কিছুটা কম হচ্ছে।
এ প্রসেঙ্গ নিউ মার্কেটের ওম্যান্স সিটির বিক্রেতা মো. রাসেল বলেন, খুলনার শপিং প্রিয়রা ঈদ মার্কেট করতে ছুটছেন কলকাতায়। যার প্রভাব পড়ছে খুলনার মার্কেটগুলোতে। বেচা-কেনা কম।
নিউ অশোক বস্ত্রালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী তাপস সাহা বলেন, সরাসরি কলকাতায় যাওয়া যাচ্ছে বলে খুলনাঞ্চলের সচ্ছল পরিবারের সদস্যরা কলকাতামুখী। তারা কেনাকাটা করছেন সেখান থেকে। দোকানে নানা ডিজাইনের রকমারি পোশাক আনলেও আমাদের ক্রেতা কমেছে।
তিনি জানান, যারা কলকাতায় যেতে পারছেন না তারা স্থানীয় মার্কেট থেকে কেনাকাটা করছেন। এ ক্রেতারাই তাদের ভরসা।
তবে, অনেক ব্যবসায়ীদের মতে, সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও কলকাতায় গিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতাদের পছন্দের পোশাকটি আনতে পারছেন।
সোমবার (২২ মে) গ্রিন লাইন পরিবহনের বাস দিয়ে কমলাপুর বিআরটিসি আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রা শুরু হয়। এদিন কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে খুলনা হয়ে ঢাকায় যায়।
এর আগে ৮ এপ্রিল নয়াদিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রুটে বাস ও ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর খুলনা-কলকাতা রুটে বাস চালু হওয়ায় উচ্ছাসিত হয়ে অনেকে কেনাকাটার পাশাপাশি শখ মিটাতেও কলকাতায় ঘুরতে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৭
এমআরএম/ওএইচ/