বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্র জানায়, সম্প্রতি ৯৫ কারখানায় বেতন-বোনাসকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতরের প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়ে-চড়ে বসেন মালিকরা। একাধিক বৈঠকও হয়েছে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে।
প্রথমদিকে শ্রমিকপক্ষ ২০ রোজার মধ্যে বোনাস ও জুন মাসের পুরো বেতন পরিশোধের দাবি জানালেও অপারগতা জানান মালিকপক্ষ।
পরে মালিক-শ্রমিকপক্ষের বৈঠকে উভয়পক্ষের সম্মতিতে ২০ জুন অর্থাৎ ২৪ রমজানের মধ্যে ছোট-বড় সকল গার্মেন্টস কারখানায় বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। মালিকদেরকে মৌখিকভাবে এ নির্দেশনা জানিয়েও দেয় বিজিএমইএ।
এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জুন মাসের বেতন পরিশোধের বিষয়টি। বার বার জুন মাসের পুরো বেতন পরিশোধের দাবি জানান শ্রমিকপক্ষ। কিন্তু এক্ষেত্রে মালিকরা তাদের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরলে ছাড় দেন শ্রমিকপক্ষও।
ধারাবাহিক আলোচনার পর বোনাসের সঙ্গে জুন মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধে একমত হন দু’পক্ষই।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম মুর্শেদী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বেতন-বোনাস নিয়ে পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার রীতিটি এবার আমরা পরিবর্তন করতে চাই। কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতরের আঞ্চলিক ক্রাইসিস প্রতিরোধ কমিটি যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে, সেটিও আমরা নজরে রেখেছি। প্রতিবেদন অনুসারে যে ৯৫টি কারখানায় বেতন-বোনাসকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অশান্ত হতে পারে, তাদেরকেও নির্দিষ্ট সময়ে ২০ জুনের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
‘ইতোমধ্যে কিছু কিছু কারখানায় শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। কিছু কারখানায় রোববার (১৮ জুন), কিছু জায়গায় সোমবারের (১৯ জুন) মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আগামী মঙ্গলবারের (২০ জুন) মধ্যে সকল কারখানায় বোনাস ও চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ হয়ে যাবে বলে আশা করছি’।
টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০ জুনের মধ্যে সকল কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন মালিকরা। কিন্তু বেতন-বোনাস নিয়ে মূলত সমস্যাটা হয় ছোট ও মাঝারি আকারের কারখানাগুলোতে’।
‘ছোট কারখানাগুলো বিজিএমইএ’র সদস্যই নয়। সেক্ষেত্রে বিজিএমইএও দায় নিতে চায় না। আর সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করা ছোট কারখানার সংখ্যাও কম নয়। তবে আমরা আশাবাদী যে, এবার বেতন-বোনাসকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না’।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
ইউএম/এএসআর