চলছে বরিশাল ডিপোর অধীন বাসের মেরমতির কাজ। তারপরও যাত্রীদের অভিযোগের কমতি নেই সরকারি এই বাসের সার্ভিস নিয়ে।
বৃষ্টি হলে বাসের ভেতরে পানি পড়ে। যাত্রীরা বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে জানালার পরদা অথবা পলিথিন ব্যবহার করেন।
আবার বরিশাল-কাওরাকান্দি রুটের বাসে কখনো এসি চলে, কখনো চলে না। অনেক সময় বাসের ভেতরের উৎকট গন্ধে যাত্রীদের বমির উদ্রেক হয়।
দুর্ভোগের এখানেই শেষ নয়। বরিশাল থেকে পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর রুটের বিভিন্ন গাড়িতে পথে-পথে ইচ্ছামাফিক গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলা নৈমিত্তিক ব্যাপার। এছাড়া অনৈতিকভাবে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও আছে।
যদিও এসব ‘অভিযোগ ঠিক নয়’ বলে দায়সারা জবাব দিয়েই খালাস বরিশাল বিআরটিসি’র বাস ডিপো কর্তৃপক্ষ।
বিআরটিসি বাস ডিপো ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে চলছে এসি, নন-এসি বাসের মেরামতির কাজ। কোনোটার দরজা লাগানো হচ্ছে। কোনটার এসি বা ইঞ্জিন মেরামত করা হচ্ছে। চেক করা হচ্ছে, চেসিস-চাকা।
মেকানিকরা জানান, ট্রিপ শেষে কোনো গাড়িতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবেই সারানো হচ্ছে। যাতে ঈদের আগে কোনো রুটের বাস সেবা থেকে বাইরে চলে না যায়।
তবে ত্রুটিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বাসগুলো যেসব যন্ত্রাংশ দিয়ে মেরমত করা হচ্ছে তা নিয়েও রয়েছে চালক-হেলপারদের অভিযোগ। তাদের দাবি, প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রাংশ না পাওয়া যাওয়ায় জোড়াতালি দিয়েই চলছে নামকা ওয়াস্তে মেরামতির কাজ। ফলে সেই মেরামতিও বেশি দিন টিকছে না।
ডিপো সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল ডিপো থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২১টি স্থান বা রুটে গাড়ি চলাচল করে। এর মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট বরিশাল-কাঁঠালবাড়ি ঘাট পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। যেখানে কিলোপ্রতি এসি বাসের জন্য ২ টাকা ৩৫ পয়সা এবং নন-এসি বাসের জন্য ১ টাকা ৪২ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করা।
বরিশাল-কাঁঠালবাড়ি রুটের বাস সার্ভিসে সবগুলোই এসি সার্ভিসের আওতাভূক্ত। আর এর প্রতিটি বাসের টুকটাক মেরামতির কাজ বরিশাল বাসের নিজস্ব ওয়ার্কশপেই করানো হয়।
মাওয়া থেকে বরিশালে আসা শাকিল নামে এক যাত্রী জানান,অন্যান্য নন এসি বাসের ভাড়া ১৮০ টাকা সেখানে বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া নেয়া হয় ২৫০ টাকা। বাসে এসি থাকলেও তা তেমন কাজ করে না। অনেক সময় ভেতরের দুর্গন্ধে নারী ও শিশুদের বমি করা ছাড়া উপায় থকে না।
আরেক যাত্রী মো. আওলাদ হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলেই এসি বাসের ছাদ থেকে পানি পড়ে। যা কাপড় নয়তো পলিথিন গুজেঁ ঠিক রাখতে হয়। এমন গাড়িতে ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদের কিভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব—এমন সঙ্গত প্রশ্নও তুলেছেন যাত্রীরা।
এসব বিষয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিটি বাসে ঈদের আগে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মেরামতির কাজ করানো হয়েছে। এটা নিয়মিত মেরামতিরই অংশ। কিছু বাসের ভেতরে পানি পড়তে পারে। তবে সেগুলোও সংস্কারের চেষ্টা চলছে। কোনো বাসের এসি নষ্ট নেই। তাছাড়া এসি বন্ধও রাখা হয় না।
তিনি বলেন, বরিশাল থেকে মাওয়া রুটে ১২টি এসি বাস নিয়মিত চলাচল করে। ঈদে আরো ২টি বাড়িয়ে স্পেশাল সার্ভিসে সংযুক্ত করা হবে। ঈদের আগে ও পরে স্পেশাল সার্ভিসের জন্য নির্ধারিত কোনো সময় থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, এই রুটে নন-এসি বাসের যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২শত টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৩ শত টাকার ওপরে। কিন্তু বেসরকারি বাসের কারণে এসি বাসের ভাড়া আড়াইশ টাকাই রাখা হচ্ছে। নয়তো যাত্রীদের জিম্মি করা হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
এমএস/জেএম