এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) সূত্র জানায়, এক বছরে মূসক বাবদ ১০ কোটি ৬৮ লাখ ৩ হাজার ৬৬৪ টাকা ১০ পয়সা ভ্যাট ফাঁকি দেয় প্রিমিয়ার ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংকটির বিরুদ্ধে মামলা করে এলটিইউ।
অবশেষে মঙ্গলবার (২০ জুন) উচ্চ আদালত এনবিআরের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সুতরাং, ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া অর্থ ব্যাংকটিকে পরিশোধ করতেই হবে।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালে সংশোধিত ‘মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১’ এর ধারা ৭২ ও ধারা ৫ এর উপধারা (৪) অনুসারে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারীর ওপর ৯ শতাংশ হারে মূসক ধার্য করে। এছাড়া স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারী অর্থ পণ্যের বিনিময়ে কোনো স্থান বা স্থাপনা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা রাখে। তবে আবাসিক কাজে ব্যবহারের জন্য প্রদত্ত সুবিধা ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত অনধিক ১৫০ বর্গফুট আয়তনের কোনো স্থাপনা এই মূসকের অন্তর্ভূক্ত নয়। ‘অর্থ আইন-২০১১’ এর মাধ্যমেও মূল্য ‘সংযোজন কর আইন, ১৯৯১’ এর ধারা ৩ এর উপধারা (৩) এর দফা (ঙ)তে অন্যান্য ক্ষেত্রে সরবরাহকারী ও সেবা গ্রহণকারী সংযোজন করা হয়েছে। যে কারণে ২০১১ সালের জুলাই ও এর পরবর্তী সময়ের স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য মূসক স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারীর কাছ থেকে আদায় করে এনবিআর।
এলটিইউ জানায়, বেসরকারি দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড গত বছরের জানুয়ারি মাসে ৬৮ লাখ ৯৬ হাজার ৭৭৮ টাকা ৩০ পয়সা, ফেব্রুয়ারিতে ৬৭ লাখ ১৪ হাজার ৪০ টাকা ৫ পয়সা, মার্চে ৬৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৯ টাকা ৩৯ পয়সা, এপ্রিলে ৬৭ লাখ ৬২ হাজার ৫৪৫ টাকা ২৮ পয়সা, মে মাসে ৬৬ লাখ ১২ হাজার ৪৩৭ টাকা ৭৯ পয়সা, জুনে ৬৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩০১ টাকা ২৪ পয়সা, জুলাইতে ১ কোটি ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৪ টাকা ৮০ পয়সা, আগস্টে ১ কোটি ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৯৪৯ টাকা ৯৫ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ১ কোটি ৮ লাখ ৪ হাজার ৪১৪ টাকা ৬৫ পয়সা, অক্টোবরে ১ কোটি ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৭ টাকা ৩০ পয়সা, নভেম্বরে ১ কোটি ৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭০০ টাকা ৪৫ পয়সা ও ডিসেম্বর মাসে ১ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার ৭৪৪ টাকা ৮৫ পয়সা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোন্দকার ফজলে রশিদের ব্যক্তিগত ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এলটিইউ’র সহকারী কমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকটি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছিলো। এ অর্থ চাওয়া হলে ব্যাংকটি প্রথমে হাইকোর্টে রিট করে এবং হাইকোর্ট তাদের রিট স্থগিত করে দেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টে এনবিআরের মামলা স্থগিতে আবেদন (সিভিল পিটিশন) করলে উচ্চ আদালত মঙ্গলবার সেটিও বাতিল করে দেন। অর্থাৎ ব্যাংকটিকে ফাঁকি দেওয়া সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতেই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭
এসজে/এএসআর